এশিয়ান কাপ ফুটবলের এই আসর যেনো একের পর এক ইতিহাস গড়ার জন্যই মাঠে গড়িয়েছে।ফিফার ক্রম তালিকায় অনেক পিছিয়ে থাকা দলগুলো একের পর এক এশিয়ার ফুটবল পরাশক্তি হিসেবে পরিচিত দলগুলোকে হারিয়ে বা ড্র করে নিজেদের ফুটবল ইতিহাসের অনেক প্রথমের স্বাদ দিয়েছেন নিজ নিজ দেশবাসীকে। এই আসরেরই গ্রুপ পর্বে এই দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল।
২-২ গোলে ড্র হওয়া সেই ম্যাচটি জর্দানের জন্য জয়ের সমান ছিলো।আজকের সেমিফাইনালের ম্যাচ প্রিভিউ লেখার সময় হেড টু হেড চেক করছিলাম।ঐ ড্র ছিলো জর্দানের সেরা ফল।তারমানে এর আগে কোনদিনই দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জয় পায়নি তারা। আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে সেমিফাইনাল শুরু হবার আগে কারো ফেভারিট হিসেবে জর্দান ছিলোনা।৫৬ ধাপ নীচে থাকা প্রতিপক্ষ ফেভারিট হয় কেমন করে?তারউপর কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার পারফরম্যান্স ছিলো চার কোয়ার্টার ফাইনালের সবার সেরা। জর্দানের জন্য হারানোর কিছু ছিলোনা এই ম্যাচে।আর ফেভারিট হিসেবে নামার একটি চাপ থাকে।সেই চাপটাই আজ নিতে পারেনি ক্লিন্সম্যান শিষ্যরা।পরিসংখ্যান সেই সাক্ষীই দেয়।
৭০% বলের দখল রেখেও পুরো খেলায় একটি শটও মারতে পারেনি অন টার্গেটে দক্ষিণ কোরিয়া।বিপরীতে ৩০% বলের দখল রেখে আটটি শট ছিলো জর্দানের অন টার্গেটে।যা থেকে দুটো গোল পেয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জয় ও এশিয়ান কাপ ফুটবলের ফাইনালে উঠলো জর্দান। গোলশূন্য প্রথমার্ধ শেষে খেলার ৫৩ মিনিটে আল তামারির এসিষ্ট থেকে আল নিয়ামত গোল করে দলকে ১-০ তে এগিয়ে নেন।এই গোল জর্দানকে আরও উজ্জীবিত করে তোলে।আর মিডফিল্ডার আল তামারি তো কোন এক ঐশ্বরিক বলে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন।খেলার ৬৪ মিনিটে চারজনকে কাটিয়ে একক প্রচেষ্টায় যে গোলটি করলেন আল তামারি,তা বহুদিন মনে রাখবেন খেলা দেখা দর্শক।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে যেমনটা খেলার কথা ছিলো তার অর্ধেকও খেলতে পারেনি দক্ষিণ কোরিয়া।তাই কোন গোল ফেরত না দিয়েই খেলা শেষ করে দেশের প্লেন ধরায় মগ্ন হয়ে যান হিউ মিন সনরা।অপরদিকে ঐতিহাসিক অর্জনে পুরো জর্দান তখন আনন্দে রীতিমতো উন্মত্ত।