ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জেনোসাইড বা গণহত্যার অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলায় অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন আদালত।পুরো বিশ্বের দৃষ্টি নিবন্ধিত ছিলো এই আদেশের দিকে। আজ ২৬ জানুয়ারী শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের জুরিগণ অন্তর্বর্তী রায় দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ইসরায়েলকে গাজায় জেনোসাইড প্রতিরোধ করতে দেশটির ক্ষমতার মধ্যে থাকা সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত তার রায়ে বলেন,ইসরায়েলকে নিশ্চিত করতে হবে যেন তার বাহিনী জেনোসাইড না চালায় এবং কথিত জেনোসাইডের প্রমাণ সংরক্ষণ করা হয়। আল জাজিরা জানিয়েছে,আন্তর্জাতিক এ আদালত ইসরায়েলকে গাজা উপত্যকায় মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করার নির্দেশ দিলেও কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির আদেশ দেননি।
বিবিসি জানিয়েছে,আদালত বলেছেন গণহত্যামূলক বলে বিবেচিত হতে পারে,এমন যেকোনো কাজ প্রতিরোধে ইসরায়েলকে অবশ্যই সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।কোনো গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করা, শারীরিক ক্ষতি ঘটানো, কোনো গোষ্ঠীর ধ্বংস ঘটাতে পরিকল্পিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, জন্ম রোধ করা, ইত্যাদি গণহত্যামূলক কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে। ইসরায়েলকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে,তাদের সামরিক বাহিনী কোনো গণহত্যামূলক কাজ করবে না। গাজায় গণহত্যার জন্য উসকানি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে এমন যেকোনো প্রকাশ্য মন্তব্য ইসরায়েলকে অবশ্যই প্রতিরোধ ও শাস্তি দিতে হবে।মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে ইসরায়েলকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।
ইসরায়েল গাজায় জেনোসাইড প্রতিরোধে তার ক্ষমতার মধ্যে থাকা সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ পালনের জন্য কী করছে তা এক মাসের মধ্যে আদালতকে জানাতেও দেশটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। আইসিজে প্রেসিডেন্ট,বিচারক জোন ডনাহিউ বলেন, আদালতের এই রায় ইসরায়েলের জন্য আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা তৈরি করেছে।রায় পড়ার সময় আইসিজে প্রেসিডেন্ট বলেন,আদালত ফিলিস্তিনিদের জেনোসাইড থেকে রক্ষা পাওয়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়। আইসিজে প্রেসিডেন্ট বলেন,জেনোসাইডের মামলার জন্য বিতর্কিত যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।গাজায় জেনোসাইডের জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে করা মামলাটি আদালত বাদ দিয়ে দেবে না।এ বিচারক আরও বলেন,ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আনা কিছু অভিযোগ জেনোসাইড কনভেনশনের বিধানের মধ্যে পড়ে। বিচারক বলেন,আদালত দেখেছে, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের ফলে প্রচুর মৃত্যু এবং আহত হয়েছে।সেইসঙ্গে এ অভিযানের কারণে ব্যাপকভাবে বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে,জনসংখ্যার বিশাল অংশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মার্টিন গ্রিফিথসের একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে আরও বলেন,’গাজা একটি মৃত্যুপুরী ও পৃথিবীর নরকে পরিণত হয়েছে’।
সূত্র:-আল-জাজিরা ও বিবিসি।