যে কোন কাজ নিষ্ঠার সাথে করলে একদিন তার মূল্যায়ন হবেই। পুরস্কারপ্রাপ্তরা নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছেন বলেই আজ পুরস্কৃত হয়েছেন। পুরস্কার লেখকদের এগিয়ে যেতে প্রেরণা যোগায়। একইসাথে সমাজ ও জাতির প্রতি দায়িত্বশীল হতে উৎসাহিত করে। সৃজনশীল কাজে যারা নিবেদিত থাকেন তারা মানুষের কাছে বরণীয় হন। তাই আমাদের সৃজনশীলতার সাথে, বইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে। বইয়ের সাথে বন্ধুত্ব থাকলে কোন শিশু বা কিশোর ‘কিশোর গ্যাং’ এর মতো গর্হিত কাজে লিপ্ত হবে না। লেখকরাই পারেন সমাজমনস্ক সৃজনশীল সাহিত্য রচনার মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের মনোজগত সমৃদ্ধ করতে। মুঠোফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ তথা কম্পুটারের মতো যান্ত্রিক ডিভাইসের আধিপত্যকে মোকাবেলা করেই লেখকদের এগিয়ে যেতে হবে। শিশুসাহিত্যিকদেরও পাঠকদের মনস্পর্শী রচনায় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে।
সৃজনশীল শিশুসাহিত্য সংসদ স্বকাল আয়োজিত স্বকাল শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে আলোচকরা উপর্যুক্ত মন্তব্য করেন। শনিবার (২৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টায় কদম মোবারকস্থ চট্টগ্রাম একাডেমির ফয়েজ-নুরনাহার মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ শিশুসাহিত্য পুুরস্কার প্রাপ্ত লেখকদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাশেদ রউফের সভাপতিত্বে ও স্বকাল পরিচালক, শিশুসাহিত্যিক অরুণ শীলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ-গবেষক ও সাহিত্যিক ড. আনোয়ারা আলম, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নাসের রহমান, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট ও শিল্পশৈলী পত্রিকার সম্পাদক নেছার আহমদ। ড. আনোয়ারা আলম বলেন, শিশু সাহিত্য নিয়ে অনেক গবেষণা আছে। শিশুদের মনকে জয় করা সবচেয়ে কঠিন কাজ, শিশুদেরকে বই পড়ার প্রতি আকৃষ্ট করে তুলতে হবে।
কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক নাসের রহমান বলেন, শিশুসাহিত্যের পরিধি অনেক বিশাল এবং শিশুসাহিত্য রচনা করা অত্যন্ত কষ্টদায়ক ও কঠিন কাজ। শিশুদের মনস্তত্ত্ব বুঝে এ সাহিত্য রচনা করতে হয়।
প্রাবন্ধিক নেছার আহমদ বলেন, শিশুসাহিত্য আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয়। প্রকৃত শিশুসাহিত্য শিশু থেকে বয়স্কজন সবাইকে আলোড়িত করে।
এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন কবি ও গল্পকার দীপক বড়ুয়া, কবি ও সাংবাদিক বিপুল বড়ুয়া, ছড়াকার মিজানুর রহমান শামীম, গল্পকার ইফতেখার মারুফ, কবি ও শিশুসাহিত্যিক অমিত বড়ুয়া, কবি-প্রাবন্ধিক সাঈদুল আরেফিন, গল্পকার-সম্পাদক রুনা তাসমিনা ও শিশুসাহিত্যিক আবুল কালাম বেলাল। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন কবি ও শিশুসাহিত্যিক আজিজ রাহমান। অনুভূতি ব্যক্ত করেন পুরস্কারপ্রাপ্ত তিন লেখক এমরান চৌধুরী, আখতারুল ইসলাম ও সুবর্ণা দাশ মুনমুন। পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে সার্টিফিকেট, সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ তুলে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, সৃজনশীল সাহিত্য সংসদ স্বকাল বৃহত্তর চট্টগ্রামে অবস্থানকারী লেখক ও চট্টগ্রামের প্রকাশকদের উৎসাহিত করতে স্থানীয় লেখক ও স্থানীয় প্রকাশনা হতে প্রকাশিত বই আহবান করে যথাক্রমে গদ্য পদ্য শাখায় পুরস্কার প্রদান করে থাকে। এবার ২০২২ সালে গদ্যে পেয়েছেন এমরান চৌধুরী, পদ্যে পেয়েছেন যৌথভাবে আখতারুল ইসলাম ও সুবর্ণা দাশ মুনমুন।