জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সারাদেশে ৯৩টি উন্নত মাছ শুকানোর র্যাক বিতরণ করবে।
এফএও’র গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটির (জিইএফ) অর্থায়নে পেস্টিসাইড রিস্ক রিডাকশন ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের অধীনে এই উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়।
আজ শনিবার চট্টগ্রামে বাংলাদেশের মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে উন্নত মাছ শুকানোর প্রযুক্তি প্রদর্শন ও বিতরণের জন্য একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এফএও।
এফএও’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাছ শুকানোর পদ্ধতি উন্নত করতে এবং স্থানীয় মৎস্যজীবীদের উন্নত অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত ফলাফল নিশ্চিত করার জন্য এফএও সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় মাইলফলক।
দেশে এবং বিদেশে ভোক্তাদের জন্য উচ্চমানের নিরাপদ শুকনো মাছের পণ্য উৎপাদনে স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা জোরদার করার জন্য শুঁটকি মাছ উৎপাদনে বিকল্প প্রযুক্তি গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহ্যগত পদ্ধতিতে রোদে শুকানো এবং শুকনো মাছ বাজারজাত করার সময় ক্ষতিকারক রাসায়নিক এবং বালাইনাশকের এক্সপোজার কমাতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে মাছের ঐতিহ্যগতভাবে রোদে শুকানোর প্রক্রিয়াটি জলবায়ু নির্ভর এবং এটি খোলা জায়গায় করা হয়; যেখানে বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ একটি বাস্তব সমস্যা। বিপজ্জনক বালাইনাশক বা রাসায়নিক প্রায়ই শুঁটকি মাছ শুকানোর কাজে পোকামাকড় নির্মূল করার জন্য একটি জনপ্রিয় সমাধান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। যা গুরুতর জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে। এই স্বাস্থ্যঝুঁকিরগুলি কাটিয়ে ওঠার জন্য এবং বিকল্প মাছ শুকানোর প্রযুক্তি সম্পর্কে মানুষকে জানানোর জন্য মশারি দ্বারা আচ্ছাদিত উন্নত শুকানোর র্যাক বাংলাদেশের কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় বিতরণ করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এফএও সারা দেশে ৯৩টি উন্নত মাছ শুকানোর র্যাক বিতরণ করবে। এই উদ্যোগটি এফএও’র গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটির (জিইএফ) অর্থায়নে পেস্টিসাইড রিস্ক রিডাকশন ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের অধীনে করা হয়েছে।
এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের কিছু নির্দিষ্ট মৎস্যজীবীদের কাজের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। শুকনো মাছের উৎপাদন যাদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস। প্রাপকরা এই নতুন শুকানোর র্যাকগুলোর কার্যকর ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণও পাবেন।
বিতরণ ছাড়াও ভালো বাজারযোগ্যতার জন্য শুকনো মাছ পণ্যের গুণমান বাড়ানোর জন্য সঠিকভাবে মাছ শুকানোর কৌশল, স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন এবং পদ্ধতিগুলির ওপর গুরুত্ব দিয়ে একাধিক কর্মশালারও আয়োজন করা হবে।
চট্টগ্রামের মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুর রউফ এবং মার্টিজন ভ্যান ডি গ্রোপ, এফএও বাংলাদেশের সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যান্ড পলিসি অ্যাডভাইজার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মো. আবদুর রউফ বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালী করার মাধ্যমে শুকনো মাছ ইতিমধ্যে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের মৎস্যজীবীরা যেন তাদের কাজ সক্ষমতার সঙ্গে চালানোর জন্যে প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করতে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করতে হবে।