চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে মো: ইউনুস প্রকাশ (দুদু মিয়া) (৬১) নামের এক মুসল্লী বৃদ্ধকে নামাজ পড়ে বের হওয়ার পর মাথায় গুরুত্বর জখম করে করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মো: করিম (৩৮) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনার পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ফজরের নামাজের পর ফটিকছড়ি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহমান টেন্ডলের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত মো: ইউনুস ওই এলাকার মৃত মতিউর রহমানের ছেলে। অভিযুক্ত করিম একই এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন ইউনুস সকালের নামাজ পড়ে বের হয়ে বাড়ি ফিরছিল। এমন সময় করিম দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ওই মুসল্লীকে উপর্যপুরী মাথায় আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে বৃদ্ধার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই অভিযুক্ত করিম পালিয়ে যায়। পরে সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ইউনুস কে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় সেখান থেকে চমেকে প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, করিম সবার সাথে কোন না কোনভাবে ঝামেলা বাজিয়ে রাখে। সে বিভিন্ন সময় মেয়ে নিয়ে এসে তার বউ বলে পরিচয় দেয়। নেশা করে সবাইকে অত্যন্ত খারাপ ভাষায় গালাগাল করে। মূলত একই বাড়িতে ২টা সমাজ হওয়াতে বার বার এসব করে সে পাড় পেয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে এসব কাণ্ড ঘটিয়ে তার বউকে দিয়ে বাড়ির লোকজনকে মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করে। আব্দুর রহমান টেন্ডল বাড়ি একতা সংঘের সাধারণ সম্পাদক মো: মামুন বলেন- করিম একজন সন্ত্রাসী। সে তার নিজের মায়ের উপর একাধিকবার নির্যাতন চালিয়েছে৷ এছাড়াও এখন পর্যন্ত করিম ৪-৫জন মেয়েকে তার বউ বলে ঘরে রেখেছে। এগুলো কেউ দমাতে পারেনি। এভাবে একটা সমাজ চলতে পারেনা। তার উপযুক্ত শাস্তি হতে হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী হাছিনা আক্তার বলেন- আমি সকালে বাইরে হাটছিলাম। এমন সময় দেখতেছি করিম ইউনুস কাকুকে মারতে মারতে মাটিতে পেলে দিয়ে সেখানেও মারছে। এরপর আমি চিৎকার করলে করিম পালিয়ে যায়। আমি না দেখলে হয়তো ওই বৃদ্ধকে সে মেরে পেলতো। একইবাড়ির বাসিন্দা মো: আলী বলেন- ওই সন্ত্রাসী করিমের আগেও অনেক বিচার করা হয়েছে। সে শুধরাইনি। তার জন্য পুরো এলাকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে একদিন ও রাখতে পারেনা। তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি। এছাড়াও একইবাড়ির বাসীন্দা শাহাবুদ্দিন, সেকান্দর, মুন্সি সহ একাধিক ব্যক্তি বলেন- করিম কিছুদিন পর পর বাড়িতে এসে একটা ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। এভাবে আর মেনে নেয়া যায়না। তার সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিৎ। করিমের মা আনোয়ারা বেগম বলেন- করিম অনেকবার আমাকে মেরেছে। সে আমাদের কাউকে শান্তি দিচ্ছেনা। তার জন্য আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছি। করিম এবং করিমের বউয়ের বিচার হোক সেটা আমিও চাই। ইউনুসের স্ত্রী মোছা: মোহছেনা বলেন- করিমের সাথে আমাদের কোন ঝামেলা নেই। এরপরেও সে আমাদের সব সময় গালাগাল করে। সে সন্ত্রাস সে ভয়ে আমরা কখনো কিছু বলিওনা। আজ একটুর জন্য আমার স্বামীকে সে মেরে পেলেনি। এর বিচার হতেই হবে। আমরা আইনের কাছে এর সর্বোচ্চ বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে সরেজমিনে গিয়ে জানতে চাইলে করিমকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য এ পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আরেফিন আজিম বলেন- ‘আহত ব্যক্তির মাথায় অনেকটা অংশ গভীরভাবে কেটে গেছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরা সেলাই দিতে পারিনি। তাই চমেকে রেফার্ড করা হয়েছে। তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।’ এ বিষয়ে ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর হোসেন বলেন, ভিকটিম এবং আক্রমণকারী পরস্পর চাচা- ভাতিজা ও একই বাড়ির বাসিন্দা। সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে মোবাইল অফিসার ঘটনাস্থলে গিয়েছে,সর্বশেষ কিছুক্ষণ আগে আমি গিয়ে সরজমিনে বিস্তারিত জেনেছি এবং চ,মে,ক তে চিকিৎসাধীন ভিকটিমের এটেন্ডেন্ট এর সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপর আছি।