বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
spot_img

কেবল প্রকল্প দিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন অসম্ভব, প্রয়োজন সমন্বয়: মেয়র ডা. শাহাদাত

অনলাইন ডেস্ক

কেবল হাজার-হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসণ সম্ভব নয় বরং প্রকল্পের পাশাপাশি জনসচেতনতা, পরিবেশ রক্ষা,পরিকল্পিত নগরায়ন এবং সেবা সংস্থাগুলোর মাঝে সমন্বয়ও জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

মঙ্গলবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিমের সাথে জলাবদ্ধতা নিরসণে করণীয় নিয়ে আলোচনায় এ মন্তব্য করেন মেয়র। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম এবং সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিসরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মোঃ ফেরদৌস আহমেদ,তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ. এ. এম. হাবিবুর রহমানসহ উদ্ধর্তন কর্মকর্তাগণ।

সভায় সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দরসহ সবগুলো সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে একসাথে কাজ করতে হবে। কেবল হাজার-হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসণ সম্ভব নয় বরং প্রকল্পের পাশাপাশি জনসচেতনতা, পরিবেশ রক্ষা ও পরিকল্পিত নগরায়নও জরুরি।

খাল-নদী রক্ষায় আইনের প্রয়োগ প্রয়োজন মন্তব্য করে মেয়র বলেন, আমি বাকলিয়ায় কৃষিখালে গিয়ে দেখলাম খালটা যেন ডাম্পিং স্টেশন হয়ে গেছে। অথচ বাকলিয়া এলাকার জলাবদ্ধতার পানি নিরসণে খালটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চাক্তাই খালেরও অনেক স্থানে ৭-৮ তলা বিল্ডিং হয়ে গেছে। অন্যান্য খালেও দখল ও বর্জ্য নিয়ে একই সমস্যা যা শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে, কর্ণফুলীকেও হত্যা করছে। এজন্য আমার মনে হয় প্রয়োজনে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। আমি হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়াবোনা তবে, যারা নিয়ম মানছে না, আইনের মধ্যে চলছে না অথবা সুন্দর শহর গড়ার আমাদের যে প্রত্যয় সেটার বিরুদ্ধে কাজ করছে, যারা নালা-খাল ময়লা-দখল করে তাদের জরিমানা করব।

জলাবদ্ধতা নিরসণে ওয়াসাকেও ভূমিকা রাখতে হবে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, আমার বিকল্প কিছু পরিকল্পনা আছে জলাবদ্ধতার জন্য। এই যে বর্ষাকালে অতিরিক্ত যে পানিটা আসে সেটা যদি আমরা সংরক্ষণ করতে পারি তাহলে অতিরিক্ত পানি যেগুলো নালাতে চলে যাচ্ছে সেগুলো সংরক্ষণ হলে জলাবদ্ধতা হ্রাস পাবে এবং মাটির নীচের পানির স্তরও রক্ষা পাবে। সিডিএ’রও উচিত বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জায়গা ছেড়ে বাড়ি করা হচ্ছে কী না তা নিশ্চিত করা। কারণ, পানি মাটির নীচে না যেতে পারায় কিন্তু ভূমি ধীরে ধীরে নীচে নেমে যাচ্ছে এবং ভূমিকম্প ও ভূমিধ্বসের ঝুঁকি বাড়ছে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্প দ্রত এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসণসহ জনস্বার্থে সব বিষয়ে চসিকের সাথে সিডিএ একযোগে কাজ করবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জলাবদ্ধতা নিরসণের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। ময়লার এসটিএস নির্মাণ করার জন্য কোথাও ভূমির প্রয়োজন হলে, সিডিএ’কে জানালে বিবেচনা করা হবে। বর্তমানে সিডিএ ৫৭ টি খালের মধ্যে ৩৬ টি খালের কাজ করছে। বাকী ২১টি খাল আদৌ বেঁচে আছে কীনা, থাকলে সেগুলো কীভাবে উদ্ধার করা যায় তা জানতে বাকী খালগুলো নিয়েও সমীক্ষা প্রয়োজন।

সভায় সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিসরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মোঃ ফেরদৌস আহমেদ প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে অবহিত করেন। প্রকল্পটির কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা তুলনামূলক কম স্থানে হয়েছে এবং জমাটবদ্ধ পানি দ্রুত অপসারিত হয়েছে বলে জানান তিনি। লে. কর্নেল মোঃ ফেরদৌস আহমেদ বলেন, প্রকল্পের ভৌতিক কাজের অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ। খাল দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খাল উদ্ধার করার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই প্রকল্প দ্রত এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা খাল খনন করলেও পানিতো শহর থেকে নালার মাধ্যমে খালে আসতে হবে। যততত্র পলিথিন, ময়লা ইত্যাদি ফেলে নালা ভরাট করে ফেললে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়ে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে। কর্ণফুলীর তলদেশও এ কারণে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এজন্য জনগণকে সচেতন করার জন্য ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেয়া উচিৎ।

“জলাবদ্ধতা নিরসণে পাহাড় রক্ষাও জরুরি। একটি অসাধু চক্র বর্ষার আগে পাহাড়ে এমনভাবে মাটি কাটে যাতে বৃষ্টি হলে পানির সাথে পাহাড় ধ্বসে যায়। এই মাটি পরে নালায় গিয়ে নালা জ্যাম করে ফেলে। এজন্য পাহাড় রক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি ওয়ার্ড পর্যায়েও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

সভায় চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতে করণীয় তুলে ধরেন। চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম সিডিএ’র খাল খনন প্রকল্প শেষ হলে প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনা ও দক্ষ জনবল সৃষ্টির ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।

এই বিভাগের সব খবর

পাহাড়তলী থানা লুটের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ২

৫ আগস্ট পাহাড়তলী থানায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় অস্ত্রসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পাহাড়তলী থানাধীন নয়াপাড়ার রেল বিটের পশ্চিম পাশ এলাকা...

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে

মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা চালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট শুক্রবার থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা আমদানি করা হয়েছে। প্রক্রিয়াটির সাথে...

বাংলাদেশে নতুন গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ পরিকল্পনা শেভরনের

জ্বালানি খাতের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান শেভরন জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করার প্রয়াসে বাংলাদেশে নতুন গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কোম্পানিটির...

সর্বশেষ

পাহাড়তলী থানা লুটের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ২

৫ আগস্ট পাহাড়তলী থানায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় অস্ত্রসহ...

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে

মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা চালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট শুক্রবার...

বাংলাদেশে নতুন গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ পরিকল্পনা শেভরনের

জ্বালানি খাতের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান শেভরন জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার...

পানি, ভূমি, খাদ্য ও পরিবেশের আইনী স্বীকৃতি দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশের আহ্বান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা...

চট্টগ্রামে হাসনাত-সারজিসের গাড়িবহরে ধাক্কা দেয়া ট্রাকের চালক ও হেলপার রিমান্ডে

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও জুলাই...

চট্টগ্রাম নগরে বিএনপির সব থানা-ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত

চট্টগ্রাম নগরীর ১৫টি থানা ও ৪৩টি ওয়ার্ডের বিএনপির কমিটি...