কক্সবাজারে সমন্বয়ক পরিচয়ে বনবিভাগের কর্মকর্তার কাছে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে করা মামলায় মোহাম্মদ শরীফ (২২) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার হওয়া মোহাম্মদ শরীফ মামলার প্রধান আসামি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারের সমন্বয়ক ও মামলার অপর আসামি মনির খানের (২৩) সহযোগী।
মনির খান কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের তেতৈয়া এলাকার বাসিন্দা।
মামলার নথির বরাতে জসিম উদ্দিন বলেন, গত শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নে বনবিভাগের পিএমখালী রেঞ্জ অফিসে মোহাম্মদ শরীফ স্বশরীরে গিয়ে স্থানীয় বন কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বাবুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকার কথা বলেন। এসব অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়করা কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে তথ্য দেন।
‘আলাপের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক মনির খানের সহযোগী বলে দাবি করেন। মনিরের নির্দেশে সে আলাপ করতে গেছেন বলেও তথ্য দেয়। পরে বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।’
তিনি বলেন, এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে বনবিভাগের পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বাবুল বাদী হয়ে ২ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ মামলাটি নথিভূক্ত করার পর অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি মোহাম্মদ শরীফকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার বাদী ফারুক আহমেদ বাবুল বলেন, গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ স্থানীয় সমন্বয়ক মনির খানের সহযোগী দাবি করে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ৩ লাখ টাকা চাঁদা চান। এ নিয়ে আলাপের সময় তিনি কৌঁশলে দুইজনের কথোপকথনের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করেন।
তিনি বলেন, ‘পরে আমি বিষয়টি বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করি। তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছি।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে সমন্বয়ক দাবিকারী যুবক মনির খানের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিক যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আন্দোলনকারীদের স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদুল ইসলাম শাহেদ বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারে সমন্বয়ক নামের কোনো পদ ও কমিটি নেই। ‘গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত কেউ নয়। তবে মনির খানের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আন্দোলনের সকল পর্যায়ে অংশগ্রহণ থাকলেও ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত কিনা অবগত না। ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধিরাও খোঁজ খবর নিচ্ছেন।’
কথিত চাঁদা দাবির ঘটনার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের কোনো ধরণের সংশ্লিষ্টতা নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সাথে মনির খানের সম্পৃক্ততা থাকলে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। এর দায় ছাত্র প্রতিনিধিরা নেবেন না।’
এ ব্যাপারে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে দেশের প্রচলিত আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদুল ইসলাম শাহেদ।