ইসরাত জাহান মারিয়া,বয়স পাঁচ বছর। নিজের জমানো টাকার ব্যাংকটি দিয়ে দিল বন্যাদুর্গত মানুষদের ভালবাসার উপহার দেওয়ার জন্য। তার মা নয়নমণি নাজিরহাটে বসবসাসকারী নয়নমনি মায়ের পরিবার তৃতীয় লিঙ্গের দলের প্রধান। নয়ণমণির নেতৃত্বে দলটি ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীর প্রায় ২ হাজার ৫ শত ভালবাসার উপহার হিসেবে ত্রাণ প্যাকেট বিতরণ করেন।
মায়ের এ কর্মযজ্ঞে শামিল হতে মেয়ে মারিয়াও তাঁর জমানো টাকা মায়ের হাতে তুলে দে। মারিয়া বলে,এ টাকা দিয়ে যারা কষ্টে আছে তারা খাবার খাবে ও ঘর বানাবে। আমি খুশি মনে দিলাম। মা নয়নমণি বলেন,কয়েকদিন ধরে আমরা বন্যা দুর্গতদের মাঝে ভালবাসার উপহারে হিসবে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার জিনিস প্যাকেট করে বিতরণ করে চলছি। আমার মেয়ে তা দেখে তার জমানো ব্যাংকের টাকা আমার হাতে তুলে দেয়। আমার মেয়ের এমন মনমানসিকতা দেখে আমি খুশি হলাম। আপনারা দোয়া করবেন বড় হয়ে আমার মেয়ে যেন মানুষের পাশে দাড়াতে পারে।
ফটিকছড়ি পৌরসভা আমানবাজার এলাকার মোসাম্মৎ মিপ্তা চৌধুরী, মোসাম্মৎ তাস্কিয়া চৌধুরী, মোসাম্মৎ আপিফা চৌধুরী, মোসাম্মৎ আলিশা চৌধুরী, মোসাম্মৎ জান্নাতুল মাওয়া, মোহাম্মদ এনাইয়েত,মোহাম্মদ মারসাদও তাদের জমানো টাকা তুলে দেয় বন্যা দুর্গতদের জন্য। ঠিকাদার মোহাম্মদ রুবেল বলেন,আমাদের পরিবারের ছোটরা তাদের জমানো প্রায় ১৩ হাজার টাকা বন্যাদুর্গতদের জন্য প্রদান করে।
এভাবে অনেক শিশু তাদের জমানো টাকা বন্যাদুর্গতদের জন্য তুলে দিচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা,বিভিন্ন পাড়া মহল্লার তরুনরা,বিভিন্ন ক্লাব সংগঠনের সদস্যরা বন্যা দুর্গতদের জন্য মসজিদে মসজিদে,হাটবাজারে দোকানে দোকনে,স্টেশনে গাড়ি গাড়ি গিয়ে টাকা তুলে বন্যা দুর্গতদের যসহযোগীতা করছে। এ যেন মানবিক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি বলে উল্লেখ করেন ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী। গত বুধবার থেকে উপজেলায় বন্যার সৃষ্টি হয়।
বৃহষ্পতিবার দিনগত রাত থেকে বন্যা ভয়াবহ রুপ নেয়। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ে। এমতবস্থায় বন্যা দুর্গত ফটিকছড়িবাসীর পাশে দাড়িয়ে দেশের বিভিন্নসামাজিক,রাজনৈতিক,ধর্মীয় ও মানবিক সংগঠন এবং সেচ্চাসেবক,ব্যক্তিবর্গ নজির সৃষ্টি করেছেন। বন্যায় পানিবন্দীদের উদ্ধারেরর পর ত্রাণ বিতরণে কার্যক্রম করে চলছেন এসব সংগঠন ও মানবিক কর্মীবৃন্দ। ব্যন্যা সৃষ্টি হওয়ার দিন থেকে শত শত বিভিন্ন যানবহন যোগে ফটিকছড়িতে আসে এসব সংগঠন। এখনো এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।