রেকর্ড সাক্ষী দেয় ইংলিশরা “বাজবল” ষ্টাইল ক্রিকেট খেলে আটটি টেস্ট জিতেছে চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে।কিন্তু সেগুলোর একটিও উপমহাদেশ বা ভারতের মাটিতে ছিলোনা। রেকর্ড আরও বলে,ভারতের মাঠে চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে জয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৩৮৭ রানের।ওটা করেছিলো ভারত,আর ২০০৮ সালে চেন্নাইতে সেই ম্যাচের প্রতিপক্ষ ছিলো এই ইংল্যান্ডই।বদলা নেবার সুযোগটা ইংলিশদের জন্য ৩৯৯ হয়ে এসেছিলো এই টেস্টে। পারেনি ইংল্যান্ড।হেরেছে ১০৬ রানের ব্যবধানে।প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতা সত্ত্বেও ইংল্যান্ডের আজকের পরাজয়ের জন্য চতুর্থ ইনিংসে উপমহাদেশে “বাজবল” ষ্টাইল ক্রিকেটকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞ সাবেকগন।
বিশেষজ্ঞই নন,যদি আপনিও দেখে থাকেন ইংল্যান্ডের আজকের ব্যাটিং,নিশ্চিত ভাবে আপনিও বলবেন,বুঝে শুনে খেললে ফলাফল ভিন্ন হতেও পারতো! হ্যাঁ ঠিক তাই।হাতে অনেক সময় ছিলো।উইৃকেটও আহামরি স্পিন করছিলোনা।নিবিষ্ট চিত্তে উইকেটে পড়ে থেকে দুয়েকটা জুটি গড়ে তোলা।এটি করতে পারলে একটি বিশ্বরেকর্ড গড়া সম্ভব হতেও পারতো। যা হয়নি তা নিয়ে আলোচনা করাকে ম্যাচ রিপোর্ট বলেনা এটি জেনেও খেলা দেখে জন্মানো উপলব্ধিটুকু প্রকাশ না করে পারলাম না। গতকাল এক উইকেটে ৬৭ রানে শেষ করা থেকে শুরু চতুর্থ দিন জ্যাক ক্রলির সঙ্গী রেহান ছিলেন নাইটওয়াচ ম্যান ব্যাটার।আর যেকোনো কন্ডিশনে টেস্টের শুরুর একঘন্টাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়।আজ দলীয় ৯৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ইংল্যান্ড রেহান আহমেদের আউটের মাধ্যমে।ততক্ষণে ১১ ওভার খেলে ৪৫ রান তুলেছিলেন চতুর্থ দিনের সকাল শুরু করা দু’জন।যা ইতিবাচক বার্তা ছিলো জো রুট,ওলি পোপদের জন্য।
দুঃখজনক ভাবে “বাজবল” দর্শনে বুঁদ হয়ে থেকে তাঁদের অভিজ্ঞ মস্তিষ্কও সেই বার্তা পড়তে ব্যর্থ হয়েছেন।দলীয় ১৩২ রানে আউট হওয়া পোপের রান ছিলো একুশ বল খেলে ২৩!দলীয় ১৫৪ রানে চতুর্থ উইকেট হয়ে আউট হওয়া জো রুটের রান ছিলো দশ বলে ১৬! আরেক প্রান্তে প্রথম ইনিংসের কার্বন কপি হয়ে ব্যাট করছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে ক্রলি।কার্বন কপি হবেনই যদি তাহলে খুঁত রাখবেন কেনো?প্রথম ইনিংসের মতো এবারও নিশ্চিত সেন্চুরি পেতে চলেছেন মনে হওয়া ইনিংসটার আত্মাহুতি দিয়ে বসেন উচ্চাভিলাষী শট খেলে।অথচ জনি বেয়ারষ্টোকে নিয়ে ৪০ রানের জুটি গড়ে ভারতের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন।৪২ তম ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ৭৩ রানে পঞ্চম উইকেট হিসেবে আউট হন ক্রলি।জনি বেয়ারষ্টো সঙ্গী হারানোর শোক সামলাতে পারলেন সাকল্যে তিন বল। দলীয় সেই ১৯৪ রানেই দুই সেট ব্যাটসম্যান আউট হয়ে মূলতঃ ভারতের জয়কে কেবলই সময়ের ব্যাপার মাত্র বানিয়ে দেন।ইংল্যান্ডের ড্রেসিংরুমেও ওটা সংক্রমিত হয়ে থাকবে হয়তো।নইলে বেন ষ্টোকস কেনো অমন অর্বাচিনের মতো রানআউট হবেন?
দলীয় ২২০ রানে আউট হন বেন ষ্টোকস।টেল এন্ডার বেন ফোকস,টম হার্টলিরা পরে যে ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখালেন,তাতে নিশ্চিত করেই বেন ষ্টোকস আফসোসে পুড়েছেন।উইকেটে তিনি থাকলেও হয়তো ভিন্ন গল্প তৈরী হতে পারতো।শেষ পর্যন্ত অলআউট হওয়ার আগে ২৯২ রান তুলতে পারে “বাজবল” ক্রিকেট খেলা ইংল্যান্ড। ভারতের হয়ে এই ইনিংসেও ৪৬ রানে তিন উইকেট নিয়ে দলের সেরা বোলিং পারফর্ম করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। দুই ইনিংসে ৯ উইকেট শিকার করে জশওয়ালের প্রথম ইনিংসের অতিমানবিয় ইনিংসকে পেছনে ফেলে দেন ম্যাচ জয়ী পারফরম্যান্স বিবেচনায়।বুমরাহ হন টেস্টের ম্যান অফ দ্য ম্যাচ। সংক্ষিপ্ত স্কোর:- ভারত ৩৯৬ ও ২৫৫। ইংল্যান্ড:- ২৫৩ ও ২৯২/১০।বুমরাহ ৩/৪৬,অশ্বিন ৩/৭২ ফলাফল:- ভারত ১০৬ রানে জয়ী। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ:- জাসপ্রিত বুমরাহ।