গত বছরের ১৭ এপ্রিল বিকেল ৪টা ৫৯ মিনিটে ডিএমপির মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ই-মেইল [email protected]এ [email protected] ই-মেইল হতে একটি হুমকিবার্তা সম্বলিত ই-মেইল আসে।” ওই ই-মেইলের সাবজেক্ট লাইনে লেখা ছিলো ‘Prime Minister Sheikh Hasina will be shot at 4 am on April 27. Bangladesh police do not have the power to prevent this attack. বাংলায় যাঁর অর্থ দাঁড়ায় ‘২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে।বাংলাদেশ পুলিশের ক্ষমতা নেই এই হামলা ঠেকানোর,মহারণের সাক্ষী হবে ২৭ এপ্রিল।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে ইমেইল পাঠানো,পরবর্তী সময়ে এনিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্ত,হুমকিদাতাদের সনাক্তকরন,অবস্থান জানা,তারপর বন্ধু রাষ্ট্র সৌদি আরব সরকারের সাহায্যে তাঁদের আটক করে গ্রেফতার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসার বিস্তারিত জানাতে ৪ ফেব্রুয়ারী রবিবার রোববার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন,গত বছরের ১৭ এপ্রিল বিকাল ৫টার ঠিক আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ইমেইলে একটি হুমকি সম্বলিত বার্তা আসে। সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান এই কর্মকর্তা বলেন,ওই ইমেইলের বডিতেও এই হুমকি বার্তা লেখা ছিল।আমরা তৎক্ষণাৎ হুমকি বার্তার ভয়াবহতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করিএবং ইমেইল প্রেরণকারীকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সিটিটিসির একটি চৌকস টিম অনুসন্ধান এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ শেষে ইমেইল বার্তা প্রেরণকারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং হুমকি বার্তা প্রেরণকারী ব্যক্তির নাম নাম দ্বীন ইসলাম বাদল বলে নিশ্চিত হয়। মো. আসাদুজ্জামান বলেন,ইন্টারনেট (আইপি) অ্যাকটিভিটি পর্যালোচনা করে হুমকির বার্তা দেওয়া ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত হয় সৌদি আরবে।
এরপর গত বছরের ২০ এপ্রিল এই ঘটনায় রমনা থানায় মামলা করা হয়। মামলার আসামি ও সহযোগীদের সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য পুলিশ সদরদপ্তর ইন্টারপোলের মাধ্যমে এবং একই সাথে ডিপ্লোমেটিক চ্যানেলে যোগাযোগ করা হয়।সৌদি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে তদন্ত শেষে ওই দুজনকে আটক করে এ বছরের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশে পাঠায়।বিমান থেকে তাঁরা নেমে আসার পর পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। হুমকিদাতা এই দুজন হলেন,কবির হোসেন ও দ্বীন ইসলাম বাদল।কবির সৌদি আরবে যুবদলের একাংশের সভাপতি এবং বাদলও যুবদলের এক নেতা।কবিরের বাড়ী বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে চাঁনপুরের নয়নপুরে আর বাদলের বাড়ী কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলছেন,কবির ও বাদল গত ১৬/১৭ বছর ধরে সৌদিতে ছিলেন। সেখানে তারা চাকরির পাশাপাশি ব্যবসাও করেন। দুজনের কেউই দীর্ঘদিন বাংলাদেশে যাওয়া-আসা করেননি। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, কবিরের পরিকল্পনায় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়া মেইলটি বাদল পাঠিয়েছিলেন।এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না,তা খতিয়ে দেখছে সিটিটিসি। মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন,দ্বীন ইসলামের কাছ থেকে হুমকি প্রদানকারী ইমেইল অ্যাড্রেসটির রিকভারী মোবাইল নম্বরসহ একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। তাছাড়া ওই দুজনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘প্রচুর দেশদ্রোহী কন্টেন্ট’ মিলেছে বলে মোঃ আসাদুজ্জামানের জানিয়েছেন মিডিয়াকে।