কেতাদুরস্ত সেজে নিজেকে জাহির করতেন বড় কর্তা হিসেবে। যিনি চাইলেই চাকরি দিতে পারেন সরকারি-বেসরকারি অফিসে। পাঠাতে পারেন ইউরোপ-আমেরিকা। এমন প্রলোভনে অন্তত ৪০ জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। মঙ্গলবার নগরীর হালিশহর এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিকে র্যাব গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার মোরশেদ রানা আবির (২৮) লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার পূর্ব শেরপুর গ্রামের শামসুল হকের ছেলে।চোখে সানগ্লাস, গলায় সোনার চেন। কেতাদুরস্ত মোরশেদ রানাকে দেখলে মনে হবে কোন অফিসের বড় কর্তা। বাস্তবে বড় একটি প্রতারক চক্রের প্রধান মোরশেদ রানা ওরফে আবীর। যিনি নিজেকে হোমরা-চোমরা হিসেবে জাহির করতে ক্ষণে ক্ষণে বদলাতেন সাজ পোশাক। তারই প্রমাণ র্যাবের জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কার আর জুতার বাহার।
মোরশেদ মূলত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়া আর বিদেশে পাঠানোর নামে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। র্যাবের হাতে আটক হবার পর নিজেই স্বীকার করেন কিভাবে জাল বিছাতেন প্রতারণার। এসময় তার কাছ থেকে বিভিন্নজনের ৮টি পাসপোর্ট, ৬টি এটিএম কার্ড, ৮টি চেকবই, ১০টি স্টাম্পসহ বিপুল স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করা হয়।
বহুরূপী এই প্রতারক আটক হবার খবর পেয়ে র্যাব কার্যালয়ে ভিড় জমান প্রতারিতদের মধ্যে অন্তত ২০ জন। যদিও তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন।
মঙ্গলবার চান্দগাঁও র্যাব ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমএ ইউসুফ জানান, গত কয়েকবছরে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানের লোকজনকে ফাঁদে ফেলে মোরশেদ হাতিয়ে নেন কয়েক কোটি টাকা। এখন খোঁজা হচ্ছে তার সহযোগীদের।
মোরশেদের বাড়ি লক্ষীপুরের পূর্বশেরপুর গ্রামে। প্রতারণার জন্য প্রথমে জনবহুল শহর চট্টগ্রাম ও ঢাকায় এসে অবস্থান করেন। এরপর তিনি শহরের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পাঁচ তারকা আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিং মল, জনবহুল এলাকা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসা যাওয়া শুরু করেন।
একপর্যায়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে পারবেন এমন লোকদের টার্গেট করেন। পরে তাদের সঙ্গে মোবাইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে সখ্য গড়ে তোলেন।