‘হে আল্লাহ! আমাকে আপনার সৎ বান্দাদের সাহচর্য লাভের তাওফিক দিন। আমাকে মন্দ লোকদের সঙ্গে বন্ধুত্ব থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। আপনার খোদায়িত্বের শপথ করে বলছি, আমাকে আপনার রহমতের বেহেশতে স্থান দিন।
হে জগৎসমূহের প্রতিপালক।’ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে যাকাত আদায়। যাকাত সারা বছরই দেয়া যায়। তবে রোজার মাস মরতবাপূর্ণ বলে অনেকেই যাকাত দেয়ার জন্য এ মাসকে বেছে নেয়।
পবিত্র কোরআন মাজিদের বহু স্থানে সালাতের আদেশের সঙ্গে জাকাতের আদেশ দেয়া হয়েছে। যাকাত ফরজ হওয়ার বহু পূর্বে দান করার অর্থে জাকাত দেয়ার নির্দেশ নাজিল হয়। এরশাদ হচ্ছে, ‘সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং আল্লাহকে দাও উত্তম ঋণ (করজে হাসানা) তোমরা তোমাদের মঙ্গলের জন্য অগ্রিম, যা কিছু প্রেরণ করবে তোমরা পাবে আল্লাহর নিকট।
ওটাই উৎকৃষ্টতর এবং পুরস্কার হিসেবে মহত্তর। আর তোমরা ক্ষমা চাও আল্লাহর নিকট। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ যাকাত আরবি শব্দ। যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বৃদ্ধি, পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা ও পরিশুদ্ধি। যাকাতের নির্ধারিত বিধান নাজিল হয় হিজরতের পরে।
সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় কিংবা সদকা অর্থে দান খয়রাত করতেন। কিন্তু সেসব দানের মধ্যে ছিল সাওয়াব লাভের প্রবল আকাক্সক্ষা। কত পরিমাণ দান করতে হবে, তার নির্দিষ্ট কোনো হার ছিল না।
এর বহু পরে সূরা তাওবার ১০৩নং আয়াত নাজিল হলে যাকাত আদায় ও খাতওয়ারি ব্যয় করার বিধান বলবত হয়। সূরা তাওবার ৬০নং আয়াতে জাকাত ব্যয় করার ৮টি খাত নির্ধারিত করে বিধান নাজিল করা হয়। এখানে লক্ষণীয় এতে যাকাতকে সাদাকাত বলা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ এরশাদ করেন, ‘সদকা (যাকাত) তো শুধু নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্তাকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণভারাক্রান্তদের জন্য, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের জন্য।
এটা আল্লাহর বিধান, আল্লাহ সব জানেন, প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা তওবা : ৬০)। যাকাত সালাতের মতোই ফরজ ইবাদত।
ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর আমলে ভন্ড নবীদের একটা গ্রুপ যাকাত না দেয়ার পক্ষে প্রচারণা চালালে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! যে ব্যক্তি সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে, আমি তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করব।’ (বুখারি ও মুসলিম)।