গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত। রেজি নং – ১৬৯

রোহিঙ্গা কর্মকাণ্ডে উদ্বেগ বাড়ছে সাম্প্রতিক সময়ে

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের নানা কর্মকান্ডে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে। অত্যন্ত মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশ আশ্রয় দেয় মায়ানমারের রোহিঙ্গা অঞ্চলে। সে দেশের জনতা সরকার তাদের উপর নির্যাতন নিপীড়ন চালালে তারা দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়। হাজার হাজার রোহিঙ্গা নাগরিক নির্মমভাবে তাদের হাতে নিহত হয়। গুম করে অপহরণ করা হয়। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়। তাদের উপর অত্যাচার নির্যাতনের স্টিম রোলার চালায়। এ দৃশ্য সারা পৃথিবী অবলোকন করেছে। ২০১৭ সালে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মিছিলে মিছিলে বাংলাদেশের সীমান্তে প্রবেশ করে। বাংলাদেশ সরকার অত্যন্ত মানবিক কারণে তাদেরকে আশ্রয় দেয়। তাদের জন্য উদ্বাস্ত ক্যাম্প তৈরি করা হয়। নারী শিশু বৃদ্ধ বণিতা শিক্ষিত অশিক্ষিত লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের টেকনাফ কক্সবাজারে ক্যাম্প তৈরি করে তাদেরকে আশ্রয় দেয়া হয়। তাদেরকে আশ্রয় দেয়ার পর সারা পৃথিবী বাংলাদেশ সরকারকে মানবিকতার এই আচরণের জন্য ধন্যবাদ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশের পাশে আন্তর্জাতিক দেশ সংগঠন সংস্থা দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গাদেরকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রায় ১২ লাখের অধিক এ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করছে। তাদের কারণে সে অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়-পর্বত বিলীন হয়ে গেছে। রোহিঙ্গারা তাদের ক্যাম্পে বসে বসে জাতীয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় খেয়ে দেয়ে বেঁচে আছে। তারা ঠিকমতো আহার পাচ্ছে চিকিৎসা হচ্ছে। তাদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশের সবগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে নিরলস ভাবে আন্তরিকতার সাথে তাদেরকে সেবা দিচ্ছে। এরপরেও রোহিঙ্গারা বিভিন্ন সময় নানা ধরনের উশৃংখল আচার-আচরণ করছে। তারা সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যাবসার সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। তারা চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। নারী শিশু পাচার করছে।
একটি চক্র রোহিঙ্গাদের থেকে নারী ও শিশুদেরকে প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করছে। উৎপেতে থাকা কতিপয় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঢুকে পড়ছে। কোনভাবেই তাদেরকে তাদের ক্যাম্পে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তারা কোন নির্দেশনা মানছে না। তাদের জন্য কাজ করছে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা। দেশি-বিদেশি নানা সাহায্য সংস্থা তাদেরকে নিয়মিত সহায়তা দিচ্ছে। এরপরেও তাদের উশৃংখল জীবনযাপন আইন না মানা , আনুগত্য না করা। বিভিন্নভাবে তারা এদেশের শৃঙ্খলা মানছেনা। সেটি এখন আমরা দেখছি। বাংলাদেশ সরকার নানাভাবে জাতীয় আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গাদেরকে প্রত্যাবর্তনের জন্য অনেক চেষ্টা আলোচনা বৈঠক চালিয়ে আসছে। কিন্তু মায়ানমারের সরকার আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রাজি হলেও বাস্তবে এ পর্যন্ত তারা একজন রোহিঙ্গা কেও ফেরত নেয়নি। পার্শ্ববর্তী দেশের সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশ সরকার বারবার চেষ্টা করছে। রোহিঙ্গাদেরকে আত্মমর্যাদার সাথে নাগরিক অধিকার প্রাপ্তির সাপেক্ষে তাদেরকে সে দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু সেটি মোটেও সফল হচ্ছে না।
ইতিমধ্যে নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলতে দেখা যাচ্ছে। অনেক সন্ত্রাসী গ্রুপ ক্যাম্প গুলোতো আশ্রয় নিয়েছে। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে গড়ে উঠা নানা ধরনের জঙ্গি সংগঠন সে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়ার সংবাদ পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায়। জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল সারকিয়ার সৌর সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধানকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে গ্রেফতার করেছে দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এর বাইরেও রোহিঙ্গাদের গড়া বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন সেখানে জন্ম নিয়েছে। তাদের মধ্যে আন্তঃকোন্দল ছড়িয়ে পড়ছে। ক্ষমতার দ্বন্দ তাদের মধ্যে আন্তোকোন্দল ছড়িয়ে পড়ছে। ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়মিতভাবে চলছে। একে অপরকে হত্যা করছে তারা বেপরোয়া হয়ে গেছে। বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ বলে জনগণ মনে করে। এই সন্ত্রাসের সাথে সন্ত্রাসের সাথে এক শ্রেণীর এনজিও সেবা সংস্থা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকার অভিযোগ শুনা যায়।
রোহিঙ্গাদের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ঠিকমতো তাদের পেছনে খরচ করছে না এমন এনজিও সেখান কাজ করছে সেটাও আমরা জানতে পারি। তাদের জন্য আনা অর্থ নানাভাবে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আত্মসাৎ করছে। নানাভাবে তারা সেটা অন্যখানে ব্যয় করছে অন্য কাজে ব্যায় করছে। ইচ্ছে মতো তারা তা ব্যায় করছে। যে উদ্দেশ্যে যে সব দেশ তাদের জন্য অর্থ পাঠায় সে অর্থ সেখানে যথাযথভাবে ব্যায় করছেনা। রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিশাল একটি বাণিজ্য বাংলাদেশের চলছে। বৈধ অবৈধভাবে অনেক ধরনের অনেক ধরনের সংস্থা এখানে রোহিঙ্গাদেরকে সাইনবোর্ড বানিয়ে কাজ করছে। বাস্তবে রোহিঙ্গারা বেঁচে থাকলেও তাদের বক্তব্য হলো আত্মমর্যদাহীন অবস্থায় তারা সেখানে আছে। অনেক রোহিঙ্গাদের বক্তব্য জানা যায় তারা পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে মায়ানমারে তাদের নিজ বাড়ি ভিটায় চলে যেতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার আপ্রাণ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলেও বাস্তবায়িত হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক মহল রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত পাঠানোর জন্য যেটি করা দরকার, যা করা দরকার তা এখনো হচ্ছেনা। ফলে তারা আজকে বেপরোয় উশৃংখল। কারো নিয়ম-নীতি তারা মানছেনা। আন্তঃকোন্দলে তারা বিভক্ত।
তারা নানা ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। এতে এ অঞ্চলসহ বাংলাদেশের মানুষের উদ্বেগ উৎকন্ঠা বাড়ছে। এদেশের জনগণের প্রত্যাশা অবিলম্বে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে এবং আরো যাদেরকে রাখতে হয় জাতীয় আন্তর্জাতিক ফোরাম তৈরি করে তাদের দেশে পূর্ণ নাগরিক অধিকার প্রদান করার মাধ্যমে তাদের দেশে প্রত্যাবর্তন করা হোক। অন্যথায় বাংলাদেশের জন্য স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এর জন্য এদেশের অর্থনীতি রাজনীতির জন্য তাদের অবস্থান আমাদের জন্য বড়ধরনের হুমকি। এ হুমকি থেকে বাঁচতে হলে জাতীয় আন্তর্জাতিক এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাদের প্রত্যাবর্তন ত্বরাণি¦ত করতে হবে। সেটি যতদিন না হবে ততদিন রোহিঙ্গাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা , তাদেরকে নির্দিষ্ট সীমানায় রাখা বাংলাদেশের পক্ষে কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। আশা করছি বাংলাদেশ সরকার যতদিন না তাদের প্রত্যাবর্তন কর্মসূচি বাস্তবায়ন না হয় , সে পর্যন্ত তাদেরকে কঠোর নিয়ম শৃংখলায় রাখার সব ব্যবস্থা গ্রহণ চায় জনগণ।

এই বিভাগের সব খবর

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত অং কিও মো আজ সাক্ষাত করেছেন। আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়। রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকারসহ...

বিএনপি নেতারা মানসিক ট্রমায় ভুগছেন : ওবায়দুল কাদের

বিএনপি নেতারা মানসিক ট্রমায় ভুগছে, সে কারণে আবোল তাবল বলছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল...

অক্টোবরে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন

চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামী লীগের ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা কমিটির সম্মেলন আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যা শুরু হবে চলতি সপ্তাহ...

সর্বশেষ

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত অং...

বিএনপি নেতারা মানসিক ট্রমায় ভুগছেন : ওবায়দুল কাদের

বিএনপি নেতারা মানসিক ট্রমায় ভুগছে, সে কারণে আবোল তাবল...

অক্টোবরে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন

চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামী লীগের ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা কমিটির...

চুয়েটের সাথে তিনটি সংস্থার সমঝোতা স্মারক

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)- এর সাথে সিগনাল...

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাই, পুলিশের এসআইকে হাতেনাতে ধরল জনতা

চট্টগ্রামে পাঁচলাইশ থানাধীন টাইগার পাস এলাকায় স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে...