চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের পর আপত্তিকর ভিডিও ধারণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় জামিন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন আরও এক আসামি। এ নিয়ে তিন আসামির জামিন নামঞ্জুর হল।
রোববার চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁঞার আদালতে আসামি নুরুল আবছার বাবুর পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়।
জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘আসামি ঘটনার পর গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছে। কারাগারে টিআই প্যারেডে (শনাক্তকরণ মহড়া) ভিকটিম ছাত্রী তাকে শনাক্ত করেছেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করি। তদন্তাধীন মামলা, অপরাধের গুরুত্ব এবং সামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় আদালত আসামির জামিন নামঞ্জুর করেন।’
নুরুল আবছার বাবু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। গ্রেফতারের পর বাবুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর একই মামলার আসামি নুর হোসেন শাওন ও ৩ অক্টোবর সাইফুল ইসলাম রাব্বির জামিন আবেদন নাকচ করেন আদালত। এছাড়া আদালত ক্যাম্পাসে সকল ছাত্রছাত্রীর অবাধ বিচরণের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে প্রক্টরিয়াল বডিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে যৌন নিপীড়নের পর ধারণ করা আপত্তিকর ভিডিও যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেই ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী গত ১৭ জুলাই রাতে ক্যাম্পাসে যৌন নিপীড়নের শিকার হন। মোটর সাইকেলে আসা কয়েকজন যুবক ছাত্রীর সঙ্গে থাকা তার বন্ধুকে আটকে রেখে তাকে যৌন নিপীড়নের পর বিবস্ত্র করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এ ঘটনায় ২০ জুলাই ওই ছাত্রী বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন।
ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। এ ঘটনায় র্যাব মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার পাঁচজন হল- মো. আজিম (২৩), নুর হোসেন শাওন (২২), নুরুল আবছার বাবু (২২), মাসুদ রানা (২২) এবং সাইফুল ইসলাম রাব্বি (২৩)।
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, আজিম ঘটনার মূল নেতৃত্বদাতা এবং চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী। আজিম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ছিল। নুর হোসেন শাওন হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান প্রথম বর্ষ ও মাসুদ একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সাইফুল পড়ালেখা করে না।