গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত। রেজি নং – ১৬৯

১২ ডিসেম্বর বাঁশখালী ও কক্সবাজার হানাদার মুক্ত দিবস

১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঁশখালী পাক হানাদার মুক্ত হয় ১২ ডিসেম্বর। চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র ৪ দিন আগে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পাক-হানাদারদের রুখে দিয়ে ১ম বারের মত স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিকামী জনতা। এর মধ্যে দিয়ে বিজয়ের স্বাদ পায় বাঁশখালীবাসী।

যুদ্ধকালীন বিভিন্ন সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাঁশখালীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে অভিযান চালিয়ে শত্রুমুক্ত করে। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে স্বাধীনতার বিজয়কে ছিনিয়ে আনতে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি বাঁশখালীর স্বাধীনতাকামী জনগণেরও সর্বাত্মক ভূমিকা ছিল। পাক হানাদার বাহিনী বাঁশখালীতে প্রথম অভিযান চালায় ১৯ মে ১৯৭১। নিজ এলাকা ও দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গণে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছেন বাঁশখালীর আরো ১০ জন বীর সেনানী। এইসব শহীদদের মধ্যে কালীপুর ইউনিয়নের ১৮ জনকে হাত-পা বেঁধে আধমরা অবস্থায় বাঁশখালী ডিগ্রী কলেজের দক্ষিণ পার্শ্বে গর্তে ফেলে নির্মমভাবে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়া হয়। এ বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধকালীন গ্রুপ কমান্ডার খোন্দকার মোহাম্মদ ছমিউদ্দীন এর উদ্যোগে ১৫ মার্চ ১৯৮৯ তারিখে একটি গণসমাধি ভিত্তিস্থাপন করা হয়।

২৬ মার্চ ১৯৮৯ তারিখে এই গণসমাধির ফলক উন্মোচন করেন বাঁশখালীর তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান সুজিত কান্তি সিকদার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জালাল আহমদ। বাণীগ্রামে নিহত ২২ জনকে রাতের অন্ধকারে বাণীগ্রাম মধ্য পাড়া পুকুর পাড়ে স্থানীয় মুসলমানদের সহযোগিতায় সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে এই শহীদের স্মরণে ১৬ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে নাম ফলক সম্বলিত স্মৃতিস্তম্ভ ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এমএফ কমান্ডার ও সাধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান খোন্দকার মোহাম্মদ ছমিউদ্দীন। ২৬ মার্চ ২০১২ তারিখে এই স্মৃতিস্তম্ভ ফলক উন্মোচন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক।
[৫] দীর্ঘদিন যাবত এ বধ্যভূমি ২টি অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে থাকায় সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে দৃষ্টিনন্দন বধ্যভূমি নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে বাঁশখালীর মানুষ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের এই সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলা সেচ্ছাসেবক বাহিনী প্রধান মোক্তার আহমদ (প্রাক্তন এমপি), তৎকালীন চট্টগ্রাম সরকারী সিটি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা অ্যাড. সুলতানুল কবির চৌধুরী (প্রাক্তন এমপি), তৎকালীন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৫ম বর্ষের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা ডা. আবু ইউসুফ চৌধুরী, তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিমান বিধ্বংসী গোলন্দাজ বাহিনীর রাড়ার অপারেটর খোন্দকার মোহাম্মদ ছমিউদ্দীন, পুকুরিয়ার শফিকুল ইসলাম, জলদীর নূরুল কবির চৌধুরী ও চাম্বলের মীর ওয়াজেদ আলী খান প্রমূখ।

চট্টগ্রাম শহর ও আশেপাশের বিভিন্ন অভিযানে গুরুত্বপূণূ ভূমিকা পালন করেছেন বাঁশখালীর আরেক বীর সন্তান শহীদ মৌলভী ছৈয়দ যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার ১ম প্রতিবাদকারী ও ১ম শহীদ। বাঁশখালী হানাদার মুক্ত দিবসে এসব বীর সেনানীদের বাঁশখালীবাসী গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। বাঁশখালী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবুল হাসেম চৌধুরী মানিক বলেন,১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর বাঁশখালী হানাদার মুক্ত হয়। বাঁশখালীর মুক্তিযদ্ধের বধ্যভুমির মধ্যে বাঁশখালী ডিগ্রী কলেজের পিছনে যে বধ্যভুমি রয়েছে সেটাতে দৃষ্টি নন্দন স্মৃতি সৌধ হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে। সেটার বাস্তবায়নে বাঁশখালীর প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সহ বাঁশখালী ডিগ্রী কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ড. জমির উদ্দিন সিকদার যথাযথ ভুমিকা পালন করেন বলে স্থানীয়রা জানান।

এদিকে বাঁশখালী উপজেলা ভুমি অফিসের মাঠে বাঁশখালীর সকল জীবিত ও মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত একটি স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হলেও সেটা বর্তমানে অনেকটা অবহেলায় পড়ে আছে। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের ২০১৪-১৫ অর্থ সালে নির্মিত এ স্মৃতি সৌধ উদ্বোধন করেন বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও তৎকালীন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আবদুস সালাম। এটা বিভিন্ন সময়ে বরাদ্দা দিয়ে মাঠ পর্যন্ত টাইলস করা হয়।

আজ ১২ ডিসেম্বর কক্সবাজার হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় শহীদ দৌলত ময়দানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কক্সবাজারকে শক্রমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল।এ সময় চারটি গাড়িতে করে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে কক্সবাজার শহরে পৌঁছান ক্যাপ্টেন জয় বাংলা বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা। শহরের ঐতিহাসিক পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দানে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং শো ডাউন করে কক্সবাজারকে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেন তারা।সেই সময় সেখানে বক্তব্য রেখেছিলেন ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুস ছোবাহান, জয় বাংলা বাহিনীর অধিনায়ক কামাল হোসেন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জাম্মেল হকসহ বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

এই বিভাগের সব খবর

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত অং কিও মো আজ সাক্ষাত করেছেন। আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়। রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকারসহ...

বিএনপি নেতারা মানসিক ট্রমায় ভুগছেন : ওবায়দুল কাদের

বিএনপি নেতারা মানসিক ট্রমায় ভুগছে, সে কারণে আবোল তাবল বলছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল...

অক্টোবরে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন

চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামী লীগের ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা কমিটির সম্মেলন আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যা শুরু হবে চলতি সপ্তাহ...

সর্বশেষ

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত অং...

বিএনপি নেতারা মানসিক ট্রমায় ভুগছেন : ওবায়দুল কাদের

বিএনপি নেতারা মানসিক ট্রমায় ভুগছে, সে কারণে আবোল তাবল...

অক্টোবরে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন

চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামী লীগের ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা কমিটির...

চুয়েটের সাথে তিনটি সংস্থার সমঝোতা স্মারক

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)- এর সাথে সিগনাল...

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাই, পুলিশের এসআইকে হাতেনাতে ধরল জনতা

চট্টগ্রামে পাঁচলাইশ থানাধীন টাইগার পাস এলাকায় স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে...