দিন রাত টুং টাং শব্দ,তালে তাল মিলিয়ে কাজ চলছে। দম ফেলবার ফুসরত যেন নেই তাদের। পবিত্র ঈদুল আযহাকে (কোরাবানি) সামনে রেখে ফটিকছড়িতে এমন ব্যস্থতা বেড়েছে কামারশিল্পীদের। বাড়ি নয় রাত পার হয় এখন দোকানে। আর এ দৃশ্য চোখে পড়ছে ফটিকছড়ির কামার শিল্পীদের মাঝে। কোরবানী পশু জবাই ও মাংস টুকরো করার জন্য দা ছুরী অপরিহার্য। আর এ দা ছুরী তৈয়ার করে কামারশিল্পীরা। ইতোমধ্যে ব্যাস্থ সময় কাটাচ্ছে কামাররা। দম ফেলবারও যেন ফুসরত নেই তাদের। দিন রাত টুং টাং শব্দ আসছে কামার দোকান থেকে। যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ততই ব্যস্থতা বাড়বে বলে জানান কামারশিল্পীরা। লোহা মানে আমরা জানি শক্ত বস্তু।আর এ লোহাকে আগুনে পুড়িয় নরম বস্তুতে পরিনত করে মনের মতো ডিজাইনে দা,ছুরি,বটি বানিয়ে চলছে । কেউ আগুনে পুড়ছে,কেউ হাতুড়ি দিয়ে পিটাচ্ছে ,কেউ শান দিচ্ছে। টুং টাং শব্দে মুখরিত আশে পাশের এলাকা। সরেজমিনে দেখা যায়, নাজিরহাট,বিবিরহাট,নানুপুর,হেঁয়াকো বাজার,কাজীর হাট বাজার, আজাদী বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দা, চাবুক,বটি,ধামাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বানাচ্ছে কামাররা।এসব ব্যাবহার্য জিনিস স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে পাইকারী ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় বাজার থেকে লোহা কিনে সেগুলো আগুনে পুড়ে দা, চাবুক,বটি,দামাসহ বিভিন্ন জিনিস পত্র তৈরী করছে কামাররা। বর্তমান আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শীল্পের দুর্দিন চললেও পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে এ শিল্প। দা ছুরিতে শান দিতে আসা অনেকে অভিযোগ করে বলেন,আগে কামাররা লবন পানি দিয়ে হাতের মেশিন দিয়ে শান দিত।যার ফলে এ শান খুব ভাল হত। এখন কামাররা ইলেকট্রিক মেশিনে শান দেয়। ফলে অল্পদিনে শান চলে যায়।দা ছুরিতে শান দিতে আনা মহিউদ্দিন বলেন , দাম বেশি নেওয়ার পরও কামররা দা ছুরিতে শান দিচ্ছে মেশিনে। কামার শিল্পী মাধব বাবু বলেন,বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমরাও মেশিনের মাধ্যমে শান দিচ্ছি। তবে যারা লবন পানি দিয়ে হাতে করে দিতে বলে তাদের তেমনভাবেও করে দিচ্ছি। কামার শিল্পী বৃদ্ধ অনিল বাবু বলেন, এক সময় কামারদের যে কদর ছিল বর্তমানে তা আর নেই মেশিনের সাহায্যে বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে ফলে আমাদের তৈরি যন্ত্রাদির প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হারাচ্ছে । হয়ত বা এক সময় এই পেশা আর থাকবে না। কামার শিল্পী বলরাম বলেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা এই কাজ করে আসছে সারা বছর তেমন কাজ হয় না কোরবান আসলে আমাদের ভাল কাজ হয় যাদিয়ে সারা বছর চলার জন্য কিছু আয় করে রাখি। কামার শিল্পী বিশু কর্মকার বলেন এই পেশায় আমরা যারা আছি খুবই অবহেলিত। এই পেশায় সংসার চালাতে হিমশীম খেতে হয়। কোরবানের ঈদ আসলে কিছু টাকা আয় করতে পারি। সচেতন মহল মনে করেন কামারদের সরকার কিছু আর্থিক সহযোগীতা প্রধান করা দরকার তা না হলে হয়ত এ শিল্পী একদিন হারিয়ে যাবে।