কথায় আছে কাজীর গরু খাতায় আছে, গোয়ালে নেই। এমনটি ঘটেছে চট্টগ্রামের ফটিকড়ি উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ে আসন্ন ঈদুল আযহার পশুর হাটে সেবা কার্যক্রমে। প্রতিবছর কোরবানির আগে নিরাপদ ও সুস্থ পশু বাজারে ক্রয়-বিক্রয় এবং পশুর বর্জ্য অপসারণে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সবই যেন খাতায়। কোন কাজেই নেই তারা। এমনটি ঘটছে এই উপজেলায়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী ২৯টি পশুরহাটে ৮টি মনিটরিং দল গঠন করে বাজার তদারকি করার কথা। কিন্তু বাস্তবে তদারকির কিছুই নেই। দল গঠন করলেও তা অনেকটাই কাগুজে। বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন মেলেনি। ফলে পশুর স্বাস্থ্যসেবার বালাই নেই বললেই চলে। ২ জুন উপজেলা সদরের বিবিরহাট বাজারে তাদের কোন কার্যক্রম ছিল না। অতচ রাত অবদি প্রচুর পশু বেচাকেনা চলেছে। বিবিরহাট বাজারের গরু বিক্রেতা মো. সমির বলেন, ‘হঠাৎ একটি বিক্রি করতে আনা গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি কোন প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের ডাক্তারকে পাইনি। পরে একজন গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে অসুস্থ গরুকে সুস্থ করে তুলেছি। ততক্ষণে আরেকটি গরু রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে।
’ গরু ব্যাপারি হাচি মিয়া বলেন, কোন ভেটেরিনারি টিম দেখিনি। বাজারে গরু নিয়ে আসা মোসুমী ব্যবসায়ী আবু তাহের,লক্ষিছড়ি এলাকার সুজন চাকমা,ধুরুং এলাকার বদিউল আলম,কাঞ্চননগর এলাকার মুন্সি মিয়া, লক্ষিছড়ি এলাকার সুমন মার্মা, ডেইরী ফার্ম মালিক জাফর আলম, লেলাংএলাকার আব্দুল হাকিমসহ আরো অনেকে বলেন, শুনেছি ভেটেরিনারি হাসপাতালের টিম কাজ করছে কিন্তু আমরা দেখিনি। গত ৩১ মে উপজেলার নাজিরহাট বাজারে তাদের কোন সেবা কার্যক্রম দেখা যায়নি। নাজিরহাট বাজারের গরু বিক্রেতা মো. আকবর আলী বলেন, ‘ভেটেরিনারি হাসপাতালের টিমের কোনো কার্যক্রম বাজারে কোন দিন দেখা যায়নি। একইভাবে ২ জুন চামারদিঘী বাজারে সরেজমিনে গিয়ে ভেটেরিনারি হাসপাতালের কোন টিমের সদস্যের দেখা যায়নি। জানা গেছে, তারা কোথাও পশুর সেবা দিয়েছেন এমন নজিরও নেই। অনেকের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। তারা মাঝে মধ্যে আসলেও ৫০০-১০০০ টাকা ফি নিয়ে নামমাত্র সেবা দেন।
এভাবে চরম অবহেলায় আমাদের পশুর দিন কাটে।’ মনিটরিং দলের সদস্য মো. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বাজারে টহলে থাকি। তবে অনেকেই আমাদের চেনেন না বা বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। তবে আমরা কাজের বিষয়ে সচেতন।’ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবদুল মমিন বলেন, ‘আমাদের দপ্তরে লোকবল কম। তারপরেও আমরা চেষ্টা করছি পশুরহাটে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে। গঠিত ৮টি দল তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছে।’ তবে কিছু ক্ষেত্রে মাঠ কর্মীদের অবহেলার কথা শুনা যায়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘এটি চরম অন্যায়। সরকারের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনটি করতে পারেন না। আনীত অভিযোগের বিষয়ে খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’