সন্তোষপুর উত্তর -পূর্ব বেড়িবাঁধে বসবাস করছে প্রায় ২৫টি পরিবার। এরা অনেকেই নদী গর্ভে সহায় সম্বল হারিয়ে বেড়িবাঁধে খাস জমিতে বসতি স্থাপন করেছে। প্রত্যেকটি পরিবারে শিশু সন্তান সহ ছোট- বড় ১০ থেকে ১২ জন করে সদস্য সংখ্যা। এখানকার প্রায় ২৪০ জন মানুষ বিশুদ্ধ পানির অভাবে অবর্ণনীয় কষ্ট পাচ্ছে । তাদের কোন গভীর, অগভীর নলকূপ না থাকায় পায়ে হেঁটে প্রায় ১০/১৫ মিনিটের পথ ধরে পরিবারের বউ ঝিরা একটি মৎস্য প্রকল্পের নলকূপ থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করে। এই একটি মাত্র নলকূপ তাদের পানি সংগ্রহের একমাত্র ভরসা।
মাঝে মধ্যে নলকূপ টি বিকল হয়ে পরে, তখন তারা বেড়িবাঁধের খানা খন্দর থেকে খাবার পানির সংগ্রহ করে। প্রায় নিয়মিত দূষিত পানি খাবার এবং ব্যবহার করায় পানিবাহি রোগ যেন তাদের নিত্য সঙ্গী। তাছাড়া এই কয় দিনের তিব্র দাবদাহে তাদের কষ্ট যেন আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সেখানকার অধিবাসী মো: আবুল কাশেম “সন্দ্বীপম” পত্রিকাকে বলেন, বর্ষা মৌসুমে কোননা কোন ভাবে প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করলেও খরা মৌসুমে এখনকার খানাখন্দরের পানি শুকিয়ে একেবারে চৌচির হয়ে যায়। তখন আমরা দূর লোকালয় থেকে পানি সংগ্রহ করি। পানি সংগ্রহ করা তখন আমাদের জন্য অনেক কষ্টসাধ্য।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনকালীন অনেক প্রার্থী আমাদের এখানে ভোট চাইতে আসেন। তখন তাঁদের কে বলি আমাদের এখানে একটি গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। অনেক প্রার্থী আমাদের আশ্বস্ত করেন নির্বাচন পরবর্তী আমাদের এখানে একটি গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করে দিবেন। কিন্তু তারপর তাঁরা আমাদের আর কোন খবরা খবর নেয় না। কথা হয় অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রী রাবেয়া আক্তারের সাথে, রাবেয়া বলেন সকাল বেলা স্কুলের যাওয়ার পূর্বে আমার মত আরো কয়েকজন মিলে দুর ঐ মৎস্য খামারের নলকূপ থেকে পরিবারের খাবার পানি সংগ্রহ করে তারপর আমরা স্কুলে যাই।
আমাদের অনেক কষ্ট হয়। ফলে আমরা অনেক দিন টিক সময়ে স্কুলেও পৌঁছতে পারি না। নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন হলো বৈশ্বিক উন্নয়নের একটি পূর্বশর্ত এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-৬ এর একটি অংশ। আওয়ামী লীগ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে সর্বাত্মকভাবে কাজ করছে। সেই লক্ষ্যে সন্দ্বীপের প্রতিটি ইউনিয়নে সরকার অভূতপূর্ব উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। এখানকার অধিকাংশ পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা দরিদ্র সীমার নিচে। অভিজ্ঞ মহলের অভিমত এইসব পরিবারগুলো যাতে কোন অবস্থায় সরকারের উন্নয়নের চক্র থেকে পিছিয়ে না যায়। যথার্থ কর্তৃপক্ষ অত্র এলাকার ২৪০ জন অধিবাসীর কথা বিবেচনায় রেখে দ্রুত এখানে একটি গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করলে সুপেয় পানির যেমন অভাব পূর্ণ হবে, তেমনি স্বাস্থ্য হানি থেকেও রক্ষা পাবে। এবং সরকারের টেকসই উন্নয়নেয় সফলতা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।