ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে ফটিকছড়িতে পবিত্র লাইলাতুল কদর পালিত হল। মসজিদে মসজিদে চলছে নামাজ কালাম ও ইবাদত বন্তেগী। উপমাহাদেশের আধ্যাত্বিক কেন্দ্র মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফেও আশেক ভক্তের ঢল নামে। মুসলমানদের অন্যতম ইবাদত-বন্দেগির রজনী শবে কদরের এ রাত। লাইলাতুল কদর উপলক্ষে উপজেলার মসজিদগুলোতে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগির আয়োজন করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদ আলোকসজ্জাও করা হয়। মসজিদদগুলোতে মুসল্লিদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠে। নামাজ কালাম, জিকির আজগার,মিলাদ ক্বিয়াম,কোরআন তেলেওয়াতসহ ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল হন মুসল্লিরা। এছাড়া অনেকেই স্বজনদের কবরস্থান ও মাজারে মাজারে গিয়ে জিয়ারত করতে দেখা যায়।
পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত গাউছুল আজম শাহসূফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.), হযরত গাউছুল আজম শাহসূফী সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভান্ডারী (ক.), বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী(ক.),হযরত শফিউল বশর মাইজভাণ্ডারী(ক.),হযরত শাহসূফী সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল মাইজভান্ডারী (ক.) এঁর রওজা শরীফ সহ বিভিন্ন মাজার শরীফ আলোকসজ্জা করা হয়। পবিত্র শবে কদর কে কেন্দ্র করে ভক্ত আশেকদের জন্য ইফতার,সেহেরী ও তাবরুকের আয়োজন করে মনজিল কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে দেখা যায়,এ রাতে আশেক ভক্তের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ। ইবাদত–বন্দেগির মধ্য দিয়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পবিত্র শবে কদর পালন করেন দরবারে আগত মুসল্লীরা। দরবারে আগত ভক্তরা সারারাত মাইজভাণ্ডারী মাশায়িখে কিরামদের মাজার জিয়ারত, কোরআন তিলাওয়াত, হামদ- নাত, সালাতুত তাসবিহ, বিভিন্ন নফল নামাজ, জিকির আজগার মিলাদ মাহফিল মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহ তা’আলা’র নিকট অশ্রুসিক্ত নয়নে মুক্তি ও ক্ষমা প্রার্থনা এবং রহমত কামনা করেন। এছাড়া স্ব-স্ব মঞ্জিলে সাজ্জাদানশীনগণদের সাথে সাক্ষাত করে ভক্তরা। দেশ ও বিশ্বের কল্যাণ কামনায় স্ব স্ব মনজিলের সাজ্জাদানশীনগণ মোনাজাত পরিচালনা করেন। লাইলাতুল কদরের রাত বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ রাত। পবিত্র এ রাতেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (দ.)-এর ওপর নাজিল হয়েছিল পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কোরআন। পবিত্র কোরআনে এ রাতকে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। নবী করিম (দ.) এ রাতে নিজে ইবাদতে মশগুল থাকতেন এবং তার সাহাবিদেরও বেশি বেশি ইবাদত করার নির্দেশ দিতেন। রমজান মাসের ২১ থেকে ২৯ তারিখের মধ্যে বিজোড় সংখ্যার রাতেই পবিত্র লাইলাতুল কদর।
তবে ২৭ রমজান অর্থাৎ ২৬ রমজান দিবাগত রাতকেই কদরের রাত হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন- নিশ্চয় আমি কুরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাতে ফেরেশতারা ও জিবরাইল তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় এ রাত ফজরের সূচনা পর্যন্ত। (সূরা কদর)। এ রাত কোরআন নাজিলের রাত এবং হাজার মাসের চেয়ে উত্তম রাত। এ পবিত্র রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে আসে মানবজাতির জন্য বরকত, রহমত ও কল্যাণ নিয়ে।