প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাতৃভাষা রক্ষা করতে গিয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়েছে। রক্তের অক্ষরে ভাষার অধিকারের কথা লিখে গেছে। পাকিস্তানের শাসকরা আমাদের মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল। তারা (পাকিস্তান) যখন আমাদের ওপর ঊর্দু ভাষা চাপিয়ে দিতে চায়, তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখন তমুদ্দিন মজলিসসহ আরো বেশ কয়েকটি সংগঠন নিয়ে মাতৃভাষাকে রক্ষার জন্য সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলে এবং আন্দোলন শুরু করে। সেই আন্দোলনের পথ ধরেই কিন্তু আমরা আমাদের স্বাধিকার আদায় করেছি। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই! ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই!
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, সবচেয়ে দুঃখের কথা হলো, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে অবদান, সেই আন্দোলনের যে ইতিহাস, সেখান থেকেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামটা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।
কারো কাছে হাত পেতে নয়, আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশ আমাদের মাথা উঁচু করে চলতে শিখিয়েছে।
এর আগে, দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় ২১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘একুশে পদক ২০২৪’ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
ভাষা আন্দোলন বিভাগে পুরস্কারের জন্য মৌ. আশরাফুদ্দীন আহমদ (মরণোত্তর), মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী মিয়ার (মরণোত্তর) নাম ঘোষণা করা হয়েছে। শিল্পকলা বিভাগে সংগীত ক্যাটাগরিতে জালাল উদ্দীন খাঁ (মরণোত্তর), মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণী ঘোষ (মরণোত্তর), বিদিত লাল দাস (মরণোত্তর), এন্ড্রু কিশোর (মরণোত্তর), শুভ্রদেব, নৃত্যকলা ক্যাটাগরিতে শিবলী মোহাম্মদ, অভিনয় ক্যাটাগরিতে ডলি জহুর ও এম এ আলমগীর, আবৃত্তি ক্যাটাগরিতে খান মো. মুস্তাফা ওয়ালিদ (শিমুল মুস্তাফা) ও রূপা চক্রবর্তী। চিত্রকলা ক্যাটাগরিতে শাহজাহান আহমেদ বিকাশ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও আর্কাইভিং ক্যাটাগরিতে কাওসার চৌধুরী, সমাজসেবা বিভাগে মো. জিয়াউল হক, রফিক আহামদ, ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে মুহাম্মদ সামাদ, লুৎফর রহমান রিটন, মিনার মনসুর, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ (মরণোত্তর) এবং শিক্ষা বিভাগে প্রফেসর ড. জিনবোধি ভিক্ষু এ পুরস্কার পেয়েছেন।