মালদ্বীপের সংসদে দেখা গেল এক নজিরবিহীন দৃশ্য। লাথি, ঘুসি, চড়-থাপ্পড়, চুল ধরে টানা, বাঁশি বাজিয়ে স্পিকারের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়া,সংসদীয় কার্যক্রম ব্যাহত করার লক্ষ্যে কিছুই বাদ রাখলেন না প্রেসিডেন্ট মুহম্মদ মুইজ্জুর ক্ষমতাসীন জোটের এমপিরা।এর জেরে অ্যাম্বুলেন্সে করে সংসদ ছাড়তে হয় বেশ কয়েকজন এমপিকে।
এদিকে মুইজ্জু সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার প্রস্তুতী নিচ্ছেন বিরোধীরা, জানিয়েছে এনডিটিভি। মালদ্বীপের সংবাদমাধ্যম আধাদু জানিয়েছে,গত বেশ কয়েকদিন ধরেই ভারত বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন জোটের সঙ্গে তীব্র দ্বন্দ্ব চলছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মুহম্মদ সলিহের মালদ্বীপিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি বা এমডিপির।সলিহ ভারতপন্থি হিসেবে পরিচিত।আর ক্ষমতাসীন জোটে রয়েছে প্রগ্রেসিভ পার্টি অব মালদ্বীপ বা পিপিএম এবং প্রেসিডেন্ট মুহম্মদ মুইজ্জুর পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস বা পিএনসি।এদিন মালদ্বীপ সংসদে এক গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চলাকালীন এই দ্বন্দ্ব একেবারে প্রকাশ্যে চলে এলো। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,মালদ্বীপে নতুন ক্ষমতায় এসেছেন প্রেসিডেন্ট মুহম্মদ মুইজ্জু।তার মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়েছে ২২ জন মন্ত্রীর।তাদের সংসদীয় অনুমোদনের জন্যই এক বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল মালদ্বীপ সংসদে। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুইজ্জু এবং তার নেতৃত্বাধীন জোট জয় পেলেও মালদ্বীপ সংসদে পিপিএম-পিএনসি জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।সেখানে এখনও ছড়ি ঘোরায় ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহের এমডিপি। সংসদের নিয়ন্ত্রণে তাদেরই হাতে।
এদিন মুইজ্জুর মন্ত্রিসভার ২২টি নামের মধ্যে ১৮ জনকে অনুমোদন দেয় সংসদ।আপত্তি ওঠে চারজনের নাম নিয়ে। এরপরই সংসদ অচল করে দেয় ক্ষমতাসীন পিপিএম-পিএনসি জোটের এমপিরা এবং এমডিপি এমপিদের সঙ্গে প্রচণ্ড সংঘর্ষে জড়ান তারা। সামাজিক মাধ্যমে এই সংঘর্ষের বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এমডিপি সাংসদ ঈসা এবং পিএনসি সাংসদ আবদুল্লা শাহীম আবদুল হাকিমের মধ্যে তীব্র মারামারি হচ্ছে।এক পর্যায়ে ইসার পা ধরে টেনে ফেলে দিচ্ছেন শাহীম,ইসা পড়ে যান।এরপর তিনি শাহীমের ঘাড়ে লাথি মেরে তার চুল টেনে ধরেন।এই ঘটনার ফলে শাহীম গুরুতর আহত হন।তাকে চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে,স্পিকারকে কথা বলতে বাধা দিতে, তার আসনের পাশে দাঁড়িয়ে বাঁশি-ভেপু বাজাচ্ছেন মুইজ্জুর দলের এমিপিরা।অবস্থা এমন দাঁড়ায়, সংসদে কথা বলার জন্য যে মাইক রাখা থাকে,সেই মাইক তুলে মারামারির উপক্রম হয়।এরপর মালদ্বীপ সংসদ ভবন থেকে সমস্ত মাইক সরিয়ে নেওয়া হয়। শাসক জোটের দাবি, রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জুর মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের গ্রহণ না করা, দেশের অগ্রগতিতে বাধা দেওয়ার সামিল।সংসদের স্পিকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে তারা। মুইজ্জুর প্রধান উপদেষ্টা তথা পিএনসি চেয়ারপার্সন আবদুল রহিম আবদুল্লাহর দাবি,মন্ত্রীদের অনুমোদন না দেওয়াটা দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। সূত্র:-এনডিটিভি ও আধাদু।।