ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের প্রতারণা মামলায় রাজধানীর বনানী থানার বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানা, তাঁর বোন সোনিয়া মেহজাবিন ও বোন জামাই মাসুকুর রহমানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দাশের আদালত এই রায় দেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ তদন্তের পরে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত তা গ্রহণ করেন। এরপর ই-অরেঞ্জের মূল মালিক সোনিয়া মেহজাবিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।’
মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিরা হলেন, ই-অরেঞ্জের কর্মকর্তা আমানুল্লাহ, বীথি আক্তার, জায়েদুল ফিরোজ ও নাজমুল হাসান রাসেল।
ই-অরেঞ্জের মালিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রামে মামলা করেন রিয়াজুদ্দিন বাজারের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নুরুল আবসার পারভেজ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বিভিন্ন সময় পণ্য কেনার জন্য ই-অরেঞ্জকে অর্থ প্রদান করেন বাদী। নির্দিষ্ট সময়ের পরও তাকে কোনো পণ্য সরবরাহ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। পণ্যের ফরমায়েশ (অর্ডার) নেওয়ার পর থেকে ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে নোটিশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহের আশ্বাস দেয়। কিন্তু তারা পণ্য সরবরাহ না করে দেশের প্রায় ১ লাখ গ্রাহকের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এর মধ্যে বাদিসহ তিনজনের ১১ লাখ ৮৮ হাজার টাকাও রয়েছে।
জানা যায়, ই-অরেঞ্জের পৃষ্টপোষক সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে থানায় মামলা হতে থাকলে, তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারত চলে যান। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা অনুপ্রবেশের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করেন। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতের আদালতে তার তিন বছরের জেল হয়। পরে ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর সোহেলকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ। তবে এখনো তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২৮টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি মানিলন্ডারিংও দুটি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলা। বাকিগুলো প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে।