১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ৭ অক্টোবর রাতে রাউজানের পশ্চিম গুজরা কাগতিয়া মাদ্রাসায় অবস্থিত রাজাকার ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করে। আক্রমন করার সময় রাজাকার বাহিনীর তৎকালীন কমান্ডার মরহুম ফয়েজ আহম্মদ ওরফে টিক্কা খানের নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের উপর পাল্টা আক্রমণ করে। এ আক্রমনণ রাউজানের ৭নং রাউজান ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের অলিখান বাড়ীর মরহুম ফোরক আহম্মদের পুত্র মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মুছা রাজাকার বাহিনীর নিক্ষিপ্ত গুলিতে গুরুতর আহত হয়। আহতবস্থায় সহযোগি মুক্তিযোদ্ধারা কাধে করে বহন উরকিরচর ইউনিয়নের আবুল খীল গ্রামের একটি ঘরে রেখে চিকিৎসারত অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মুছা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তখন এ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার লাশ গোপনে দাফন করার উদ্যোগ নেন মুক্তিযোদ্ধারা। ঐ সময়ে পাকহানাদার বাহিনীর সদস্য ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা আবুর খীল এলাকায় প্রবেশ করলে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মুছার লাশ হালদা নদীর তীরে ফেলে মুক্তিযোদ্ধারা হালদা নদী পার হয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মুছার লাশ আর পাওয়া যায়নি বলে জানান রাউজান পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মোবারকখীল এলাকার বাসিন্ধা মুক্তিযোদ্বা ইউছুপ খান চৌধুরী। মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ৭১ সালের ৭ অক্টোবর দিবাগত রাতে রাজাকার বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধে মুছা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরদিন কাগতিয়া মাদ্রাসায় শোকরানা মাহফিলের আয়োজন করেন রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা। শোকরানা মাহফিলের সংবাদ তৎকালীন দৈনিক আজান পত্রিকায় ফলাও ভাবে প্রকাশিত হয়।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পর রাউজানের কাগতিয়ায় রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে নিহত শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মুছার আত্মত্যাগকে নতুন প্রজম্মের কাছে স্মরনীয় করে রাখার উদ্যোগ নেয় রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবদুল ওহাব। রাউজানের সাংসদের প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কাগতিয়া মাদ্রাসার সামনে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা পরিষদের প্যনেল চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবদুল ওহাব বলেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মুছা দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছে। তার আত্মত্যাগ জাতি চিরদিন স্মরণ করবে।