রাজনীতিবিদেরা ভক্ষক নন, রক্ষক হবেন এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর সাজা বহাল রাখার রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ।
আদালত বলেন, দুর্নীতি সমস্ত লিঙ্গ, বয়স ও বর্ণের মানুষকে প্রভাবিত করে। এটি দরিদ্র ও দুর্বল গোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করে। দেশের জনগণ বিশেষ করে দায়িত্বশীল স্টেকহোল্ডারদের একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত যে, তাঁরা কেবল দুর্নীতির শিকারই নন, এর বিরুদ্ধে সংগ্রামের মূল খেলোয়াড়ও।
আদালত বলেন, রাজনীতিবিদেরা জনগণ ও দেশের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার লক্ষ্যে রাজনীতিতে জড়িত হন। এটি জনগণ ও দেশের কল্যাণের জন্য একধরনের মহান ত্যাগ ও নিষ্ঠার কাজ। রাজনীতি টাকা উপার্জনের কোনো মাধ্যম হতে পারে না। বৈধ ব্যবসা এবং অন্যান্য পেশার আশ্রয় নিয়ে অর্থ ও সম্পত্তি অর্জনের অনেক উপায় রয়েছে।
শিশুদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, ‘শিশুরা সতেজভাবে সত্যবাদী হয়, যতক্ষণ না আমরা তাঁদের অন্যরকম হতে সাহায্য করি। ছেলেবেলা এবং বাল্যকাল থেকেই শিশুদের সততা ও অসততার মধ্যে পার্থক্য করতে শেখানো উচিত। খারাপ লোকেরা সমালোচকদের চুপ করতে এবং চুরি করা সম্পদ লুকানোর জন্য একে অপরকে সাহায্য করে।’
আদালত আরও বলেন, ‘বিশ্ব ও বাংলাদেশের পরিবর্তনের অপেক্ষায় নাগরিকেরা বসে থাকতে পারে না, আমাদের প্রত্যেককে সেই পরিবর্তনে অংশ হতে হবে। বাংলাদেশিদের জন্য বাংলাদেশি ছাড়া কেউ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে না। এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবাইকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। একটি বৈশ্বিক আন্দোলন হিসেবে আমাদের লক্ষ্য হলো বিশ্বে এবং বাংলাদেশে দুর্নীতির অবসান ঘটানো, তা যেখানেই হোক বা যে রূপেই হোক না কেন। আমরা জানি যে সফল হওয়ার একমাত্র উপায় হলো নাগরিকদের জড়িত করা।’