রাজধানীতে সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত পুলিশ অধ্যাদেশের ২৯ ধারার বিধান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, সরকারের কাছে তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
এক রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রুল জারি করে।
আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদেরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী, কে এম জাবির, চাঁদপুর আইনজীবী সমিতির সদস্য সেলিম আকবর এবং ঢাকার বাসিন্দা শাহ নুরুজ্জামান, মোহাম্মদ ইয়াসিন ২০ অক্টোবর ‘জন¯^ার্থে’ এ রিট আবেদন করেন। এরপর গত বুধ ও বৃহস্পতিবার আদালতে শুনানি হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশ-১৯৭৬ এর ২৯ ও ১০৫ ধারা এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ (নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে এ রিট মামলায়।
পুলিশ অধ্যাদেশের ২৯ ধারায় বলা হয়েছে, জনসাধারণের শান্তি বা নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পুলিশ কমিশনার যখনই প্রয়োজন মনে করবেন এবং যতদিনের প্রয়োজন বিবেচনা করবেন, লিখিত আদেশ দিয়ে সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করতে পারবেন। তবে শর্ত হল, সরকারের অনুমতি ছাড়া ৩০ দিনের বেশি এমন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে না।
১০৫ ধারায় বলা হয়েছে, এ অধ্যাদেশের কোনো বিধান অথবা আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইন বা তদুদ্দেশ্যে প্রণীত কোনো বিধি, প্রবিধান আদেশ বা নির্দেশের অধীন ‘সরল বিশ্বাসে কৃত’ কোনো কাজ বা ক্ষতির জন্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।
আর সমাবেশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনে উল্লেখিত ‘যুক্তিসঙ্গত’ বিধি নিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।
রিট আবেদনে বাদী দাবি করেছেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশের ওই দুটি ধারা এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ (নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ইউডি