টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলংকা যেন খেই হারানো ক্রিকেট খেলছে। প্রতিটি ম্যাচেই একের পর এক ক্যাচ মিস করে দলটি পিঠ একেবারে দেয়ালে। আজকের ম্যাচেও নিউজিল্যান্ডের জয়ের নায়ক ফিলিপসের ক্যাচ ড্রপ করে তাকে দু’দুবার জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে। সেই সুবাদে ফিলিপস ৬৪ বলে ১০৪ রানের বিশাল ইনিংস খেলে নিউজিল্যান্ডের জয়ের নায়ক বনে গেছেন। তার সেঞ্চুরির ইনিংসটি গড়া ১০ চার ও ৪ ছক্কায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বের ম্যাচে শনিবার শ্রীলঙ্কাকে ৬৫ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১৬৭ রানের পুঁজি গড়ে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের তারা গুটিয়ে দিয়েছে ১০২ রানে।
শুরুতে নিউজিল্যান্ডের অবস্থা ছিল বেগতিক। মাত্র ১৫ রানে তাদেরকে হারাতে হয় ৩ উইকেট। সেখান থেকে ফিলিপসের হাত ধরে দলটি শেষে কিনা জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল।
চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ৮৯ রানে হারিয়ে অভিযান শুরুর পর নিউজিল্যান্ডের পরের ম্যাচ ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। আজকের জয়ে নেট রানরেট আরও বাড়িয়ে নিল গতবারের রানার্সআপরা। সেমি-ফাইনালে যাওয়ার ক্ষেত্রে যা রাখতে পারে বড় ভূমিকা।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা নিউ জিল্যান্ড প্রথম ওভারেই হারায় ফিন অ্যালেনকে। অফ স্পিনার মাহিশ থিকশানার সোজা বল ব্যাক ফুটে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ৯২ রানের ইনিংস খেলা ডেভন কনওয়ে বোল্ড হন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বলে। কাসুন রাজিথার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করার চেষ্টায় কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন কেন উইলিয়ামসন।
তখন ৪ ওভারে ১৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে নিউ জিল্যান্ড। পাওয়ার প্লেতে আর কোনো বিপদ না হলেও রান ছিল কেবল ২৫।
পরের ওভারে বিপদ আরও বাড়তে পারত। লং-অফে ফিলিপসের সহজ ক্যাচ ফেলেন নিসানকা। চার নম্বরে নামা ব্যাটসম্যান তখন খেলছিলেন ১২ রানে।
সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি দারুণ জুটি গড়ে তোলেন মিচেলের সঙ্গে। ৪৫ রানে আরেকবার জীবন পান ফিলিপস, এবার কঠিন ক্যাচ নিতে পারেননি দাসুন শানাকা।
পরের বলেই চার মেরে ফিলিপস ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৯ বলে। পরের পঞ্চাশ করতে লাগে স্রেফ ২২ বল।
তার আগেই বিদায় নেওয়া মিচেল ২২ রান করেন ২৪ বলে। ফিলিপসের সঙ্গে তার জুটিতে ৮৪ রান আসে ৬৪ বলে।
১৯তম ওভারে থিকশানাকে বাউন্ডারিতে ৬১ বলে সেঞ্চুরি করা ফিলিপস আউট হন শেষ ওভারে। একটি ছক্কায় ৫ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন স্যান্টনার।
নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন ফিলিপস। ২০১২ আসরে পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১২৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম।
ফিলিপসের ক্যাচ ফেলা নিসানকা পরে ব্যাট হাতে খুলতে পারেননি রানের খাতা। প্রথম ওভারে তাকে এলবিডব্লিউ করে, মেডেন দিয়ে নিউজিল্যান্ডের সুর বেঁধে দেন টিম সাউদি।
বোল্ট নিজের প্রথম ওভারে ধরেন জোড়া শিকার। কুসল মেন্ডিস কট বিহাইন্ড হওয়ার পর বোল্ড হন ধনাঞ্জয়া। অভিজ্ঞ পেসার পরের ওভারে এসে ফিরিয়ে দেন চারিথ আসালাঙ্কাকে।
প্রথম চার ওভারেই ফিরে যান শ্রীলঙ্কার শুরুর চার ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লের পর আক্রমণে এসে চামিকা করুনারতেœকে বিদায় করে দেন বাঁহাতি স্পিনার স্যান্টনারকে।
২৫ রানে ৫ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কার সামনে তখন শঙ্কা তাদের সর্বনিম্ন স্কোর নতুন করে লেখার। রাজাপাকসা ও শানাকার ব্যাটে কোনোমতে সেই শঙ্কা কাটায় তারা।
রাজাপাকসার উইকেট নেন গতিময় পেসার লকি ফার্গুসন। নিজের কোটার শেষ বলে শানাকাকে ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয়বার ইনিংসে চার উইকেট পূর্ণ করেন বোল্ট।
সাউদি ৪ ওভারে একটি মেডেনে ১২ রানে নেন একটি উইকেট। দুই স্পিনার স্যান্টনার ও ইস সোধির প্রাপ্তি ২টি করে।
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৬৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: গ্লেন ফিলিপস
ইউডি