মুখোমুখি অবস্থানে সরকার ও বিএনপি

নয়াপল্টনে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত ১, রিজভীসহ আটক শতাধিক

নয়াপল্টনের সংঘর্ষে নিহত ১,

 ঢাকা ব্যুরো |  বুধবার, ডিসেম্বর ৭, ২০২২ |  ৭:৪৪ অপরাহ্ণ
       

১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে গণসমাবেশ করতে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। কিন্তুু সমাবেশের অনুমতি দেয়নি আইনশৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী। তারপরও আজ বুধবার দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনের দলীয় অফিসকে ঘিরে জড়ো হতে থাকে। পুলিশ বার বার রাস্তা ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করার পরও তারা যান চলাচল ও লোকজন চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশের উপর কর্মীরা ইট পাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশও জবাবে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদেরকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় একজন পথচারির মৃত্যু হয় এবং অন্তত ২২জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে। পরে বিএনপি কার্যালয়ে ঢুকে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, শিমুল বিশ্বাস, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী এবং আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েলসহ শতাধিক নেতাকর্মীদের আটক করা হয়।

বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় কায্যালয়ে পৌছালে পুলিশ তাকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। তিনি বাইরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তিনি বলেন‘একটা ভয়াবহ, ভীতিকর ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা আশা করতে পারি না, একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ের সামনে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।’

এই পরিস্থিতিতে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ কি করা সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করেই তো এগুলো হচ্ছে। তারা সমাবেশকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
এ সময় বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কায্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীরাও অবস্থান নিয়ে সর্তক থাকে। নেতা–কর্মীরা রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মহড়া শুরু করেছেন। মিছিল, শ্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতেও দেখা গেছে।এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের রাজপথে মহড়া রাজপথের উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দেবে বলেই শঙ্কা বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

এদিকেঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন,বিএনপি জোর করে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাইলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেছেন, নয়াপল্টনে সমাবেশ করে কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে দেওয়া হবে না। জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে বিএনপিকে চারটি বিকল্প জায়গার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তারা ঐক্যমতে না আসলে অনুমতি পাবে না।


আওয়ামী লীগের দলীয় স‚ত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার সকাল থেকে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে মিছিলসহকারে অবস্থান নেন। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতা–কর্মীদের একটি দল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। মিছিল দেখা গেছে ভ‚তের গলি, হাতিরপুল ও রাসেল স্কয়ারে। সন্ধ্যা থেকে আরও বাড়বে। বিএনপির সম্ভাব্য সমাবেশস্থল নয়াপল্টন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরাও মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন।

বিএনপি ও সরকারের এই মুখোমুখি অবস্থানের কারণে জনমনে শঙ্কা বেড়েই চলছে। বিভিন্ন কাজে ঢাকায় আসা লোকজন তাদের কাজ ফেলে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাচ্ছে। ফলে বাস টার্মিনাল ও রেল ও লঞ্চঘাটে মানুষের ভীড় বাড়ছে। ঢাকায় বাসী আতঙ্কে প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইর হচ্ছে না। সবার মধ্যে কি হবে ১০ তারিখ , কি হবে প্রশ্ন।