প্লাস্টিক ও পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাব রোধে গবেষণার প্রয়োজন : মেয়র

 নিজস্ব প্রতিবেদক |  সোমবার, নভেম্বর ১৪, ২০২২ |  ১০:১৬ অপরাহ্ণ
       

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, “প্লাস্টিক নিঃসন্দেহে আমাদের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। দূষণের পাশাপাশি মাটির উবরতা ও উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। নদী-খালের নাব্যতা নষ্ট হচ্ছে। তবে দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার অস্বীকার করার সুযোগ নেই। প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার কমাতে বিকল্প নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন। প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই আমাদের শিশুদের প্লাস্টিক ও পলিথিনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে কাপড় ও পাটের ব্যাগের ব্যবহার বাড়াতে হবে। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্তত ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পায়।

আজ সোমবার সকালে হোটেল পেনিনসুলার জিনিয়া হলে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর পুরকৌশল বিভাগের SCIP Plastics Project টিমের উদ্যোগে আয়োজিত “প্লাস্টিকের দ্বারা অপূরণীয় দূষণ কমাতে টেকসই সক্ষমতা তৈরি” (Sustainable Capacity Building to Reduce Irreversible Pollution by Plastics) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সচেতনতা তৈরি ও গবেষণা তথ্য বিনিময় বিষয়ক এক গোল টেবিল বৈঠকে একথা বলেন।

জার্মানির বাউহাউস ইউনিভার্সিটি ভায়মারের সহযোগিতায় এবং জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নেচার কনজারভেশন অ্যান্ড নিউক্লিয়ার সেইফটি বিভাগের অর্থায়নে গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সম্মানিত সদস্য ও সায়িন্টিফিক এক্সপার্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন সবসময় গবেষণাকে উৎসাহিত করে আসছে। প্লাস্টিক, পলিথিন ও অটোমোবাইল বর্জ্য পরিবেশের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক। আমরা প্লাস্টিকের ব্যবহার হয়তো অস্বীকার করতে পারবো না। কিন্তু এর ক্ষতিকর দিক নিয়েও ভাবতে হবে। পলিথিন ও প্লাস্টিক আমাদের সমুদ্র এলাকা ও জীববৈচিত্র ধ্বংস করার পাশাপাশি একটি শহরের ড্রেনেজ সিস্টেমকে অকেজো করে দিচ্ছে। চট্টগ্রামের মতো শহরে এর প্রভাব অনেক বেশি।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, “যে কোনো গবেষণার জন্য ফান্ড খুবই গুরুত্বপূণ। প্লাস্টিক ও পলিথিন আমাদের পরিবেশের জন্য বিষফোঁড়া। চট্টগ্রাম যেহেতু দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী তাই এখানকার সকল স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে এই ধরনের আয়োজন নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী উদ্যোগ। প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য পানির সঙ্গে মিশে এর গুণাগুণ নষ্টের সাথে-সাথে পানিতে থাকা জীববৈচিত্রের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। নদী ও সাগরে প্লাস্টিক ও পলিথিনের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। বর্তমান সময়ে সমুদ্রের সম্পদ নিয়ে যে বিস্তর গবেষণা চলছে, প্লাস্টিক বর্জ্য এর জন্য মারাত্বক হুমকির কারণ হতে পারে। সেজন্য বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার বিকল্প নেই।”

সায়িন্টিফিক ডাইরেক্টর ও চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোছাঃ ফারজানা রহমান জুথীর সভাপতিত্বে উক্ত গোল টেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন প্রজেক্ট লিডার জার্মানির বাউহাউস ইউনিভার্সিটি ভাইমারের অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার এখার্ড ক্রাফট, চুয়েটের সাবেক উপাচার্য ও সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, চুয়েটের পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম, ঝঈওচ চষধংঃরপং চৎড়লবপঃ-এর সায়িন্টিফিক এক্সপার্ট ও পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আসিফুল হক, কুয়েটের সায়িন্টিফিক ডাইরেক্টর অধ্যাপক ড. মো. রাফিজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ওয়াসার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর প্রকৌশলী এ.কে.এম.ফজলুল্লাহ। গোল টেবিল বৈঠক পরিচালনা করেন সায়িন্টিফিক এক্সপার্ট ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গবেষণা সহযোগী জনাব ফারজানা খান ও গবেষণা সহকারী তৃষা দাশ।

জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু করা হয়। পরে দেশের প্লাস্টিক বজ্যের সামগ্রিক চিত্র নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।