দেশের প্রথম প্রতিষ্ঠিত কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে বিচিত্র প্রজাতির হরিণ। সেখানে দর্শনার্থীরা নানা জাতের হরিণদের সাথে খেলছে, ছবি তুলছে, খুনসুটি করছে। আর হরিণের সাথে গড়ে উঠছে মানুষের সখ্যতা। বনের পশু আর মানুষের অন্তরঙ্গতার এক প্রাণবন্ত মাধ্যম হয়ে উঠেছে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেতরে একটি নিদিষ্ট এলাকা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে হরিণের বেষ্টনী। এর পাশে নতুনভাবে তৈরি করা হচ্ছে বাঘ ও সিংহের বেষ্টনী। দৈনিক তিন বেলা হরিণদের খাবার দেয়া হয় বেষ্টনী ভেতর।
এসময় পার্কের সংরক্ষিত হরিণ ছাড়াও বনের অনেক হরিণ এসময় ছুটে আসে বেষ্টনীতে। তারাও ভাগ বসায় এসব খাবারে। তবে পার্ক কর্তৃপক্ষও চাহিদা মতো খাবার জোগান দিতে কার্পণ্য করছে না।
এসময় দর্শনার্থীরাও পার্কের কর্মীদের হাত থেকে কলা আর গাজর নিয়ে হরিণদের কাছে আনার চেষ্টা করছে। হরিণের দলও তাদের সাথে দুষ্টুমিতে মেতে উঠেছে। এই অপরূপ দৃশ্য দেখে তারা খুই আনন্দিত হয়েছে। সাথে সাথে ছবি ধারণ করে রাখছে।
অর্পিতা ও দীপ্ত তারা ভাই-বোন। স্কুল বন্ধ থাকায় বাবা-মা’র সাথে পার্কে ঘুরতে এসেছে। দুই ভাইবোন জানান, পার্কে অনেক পশু-পাখি দেখেছি। তবে, হরিণের এই লাফালাফি দেখে খুবই খুশি হয়েছি। অনেকবারই পার্কে আসা হয়েছে, তবে এভাবে হরিণ দেখার সৌভাগ্য হয়নি।
পার্ক সূত্রে জানা গেছে, পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীনে প্রায় ৫ থেকে ৬’শ হরিণ রয়েছে। এতে মায়া, চিত্রা, বল্গা ও সাম্বারসহ নানা প্রজাতের হরিণ রয়েছে। তবে মায়া ও চিত্রা প্রজাতির হরিণ বেশি রয়েছে।
এছাড়াও পাশের গহীন বন থেকেও নিয়মিত হরিণ ঢুকে পার্কে। এরা যেহেতু তৃণভোজী প্রাণী তাই তাদের খাবার হিসেবে কলা, ভুষি, গাজর, শশাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি দেয়া হয়। হরিণ বছরে একবার প্রসব করে। প্রজনন ঋতুতে হরিণের মাথার শিং গজায় আবার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় খসে পড়ে। যার ফলে বছরে একবার হরিণের শিং পাওয়া যায়। হরিণ সাধারণত ১৩ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
সাফারি পার্কের কর্মকর্তা (তত্ত্বাবধায়ক) মাজহারুল ইসলাম বলেন, পার্কের প্রায় দর্শনার্থীদের সিংহ, বাঘ আর হরিণ দেখা জন্য বেশ আগ্রহ। বিশেষ করে শিশুরা এসব প্রাণী দেখলে খুব খুশি হয়। তাই আমরা পার্কের একটি জায়গায় হরিণের বেষ্টনী তৈরি করেছি। আগে এই বেষ্টনী ছিলো না।
তিনি আরও বলেন, হরিণের বেষ্টনীতে প্রতিদিন তিনবেলা করে তাদের খাবার হিসেবে কলা, গাজর, ভুষি আর শশাসহ নানা ধরনের সবজি দেয়া হয়। ওইসময় পার্কের সমস্ত হরিণ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকেও হরিণ চলে আসে। মোটামুটি পার্ক আর পার্শ্ববর্তী জঙ্গল মিলিয়ে প্রায় হাজারখানেক হরিণ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। আমরা চেষ্টা করছি হরিণের সংখ্যা আরো বাড়াতে।
ইউডি