ফতুল্লায় বেড়ে চলেছে অপরাধ,সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন, নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেষ্ট পুলিশ

 রাসেল আদিত্য, নারায়ণগঞ্জ থেকে।। |  শুক্রবার, অক্টোবর ১৪, ২০২২ |  ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ
       

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একের পর এক অপমৃত্যু, নিখোঁজ,ছিনতাই ও খুনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির হঠাৎই অবনতি ঘটেছে।এনিয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।সেই সাথে প্রশাসনও চেষ্টা করে চলেছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে। সর্বশেষ ফতুল্লা থানাধীন জামতলা এলাকায় পারিবারিক কলহের জের ধরে নাসিমা(২৫)নামের এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেন।চলতি মাসে এই এলাকায় এটি চতুর্থ আত্মহত্যার ঘটনা।
গত ১৩ ই অক্টোবর শুক্রবার প্রথম প্রহর রাত সাড়ে ১২ টা দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।তবে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দৃশ্যমান থাকায় এসময় নিহতদের স্বামীকে আটক করে নিয়ে গেছে পুলিশ।
নিহত নাছিমা বেগম শরিয়তপুর সদরের আবদুল জলিল ব্যাপারী মেয়ে। তিনি স্বামী ও সন্তান নিয়ে জামলার এলাকার মামুন চৌধুরীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।নিহতের মা সালেহা বেগম ও প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে পারিবারিক ভাবেই নাছিমার সাথে আলমের বিয়ে হয়।তাঁদের তিন বছরের একটা ছেলেও আছে। কিন্তু সংসারে নাছিমা সুখী ছিলো না।কয়েকদিন পরপরই বিভিন্ন অজুহাতে স্বামী ও শ্বশুর শ্বাশুড়ি নাসিমাকে প্রহার করতো।এনিয়ে কয়েকবার সালিশও হয়েছে।তারপরও অত্যাচার কমেনি। এজন্য নাসিমা গত এক মাস ১৩ দিন আগে এই বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়া স্বামী সন্তান নিয়ে আলাদা থাকছে। কিন্তু এখানেও আলম ওরে আজকে মারছে।জানান মা সালেহা বেগম।
ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক গোলাম সারোয়ার জানান, ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে ওই নারী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তবে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যু কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
বাড়ির কেয়ারটেকার কল্পনা বেগম বলেন, বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে চারতলার একটা রুমে তাদের স্বামী ও স্ত্রী মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর আলম ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়। কিছুক্ষন পর নাছিমাও বাইরে যায়। ১০ মিনিট পর নাছিমা আবার ফিরা আসে। পরে গিয়া দেখি ফ্লোরে নাসিমাকে পইরা থাকতে। মনে হয় কি জানি খাইছিলো। তার স্বামীরে খবর দেয়ার পর শ্বশুর আইসা হাসপাতালে নিয়া গেছে। এরপর সেখান থেকে আবার লাশ নিয়া বাসায় আসছে।ততক্ষনে বাড়িতে পুলিশ চলে আসে।ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রিজাউল হক জানান, নিহতের স্বামীর আলম পেশায় চা দোকানি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের স্বজনরা তার বিরুদ্ধে মামলা করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।অন্য এক ঘটনায় ফতুল্লায় অটেরিক্সা ছিনতাইকালে দুই ছিনতাইকারীকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করেছে স্থানীয় পথচারীরা।
আটককৃত ছিনতাইকারীরা হলো- ফতুল্লা মডেল থানার দেওভোগ মাদ্রাসার সামছুলের বাড়ীর ভাড়াটিয়া শাহিনের পুত্র সোয়াত(২০) ও একই এলাকার লিয়ন মিয়ার ভাড়াটিয়া ওসুমন মিয়ার ছেলে মোঃ ইমন (২১)।সাম্প্রতিক কালে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের হার আশংকাজনক বেড়ে গেছে।গত দুইমাসে সদর ও ফতুল্লা মডেল থানা এলাকায় ছিনতাইকারীরা দুই চালককে হত্যাও করেছে।যদিও পুলিশ দ্রুত হত্যাকারীদের আটক করতে সক্ষম হয়েছে।এই ঘটনার বিবরনে জানা যায়, জানা যায়,৪-৫ জনের একটি ছিনতাইকারী দল বৃহস্পতিবার ভোর রাত চারটার দিকে পঞ্চবটী এনসিসি পার্কের গেইটের সামনের রাস্তায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একটি অটোরিক্সার গতিরোধ করে চালক কে মারধর করে। এক পর্যায়ে অটোরিক্সাটি ছিনিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে চালক চিৎকার করলে স্থানীয় পথচারীরা এগিয়ে এলে ছিনতাইকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেস্টা করলে ধাওয়া করে সোয়াত ও ইমন নামক দুই ছিনতাইকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে গণপিটুনি দিয়ে তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক আরিফ পাঠান জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।

ইমা