জশনে জুলুছকে পর্যবেক্ষণ করতে গিনেস বুক টিম চট্টগ্রামে

বিশ্বের সর্ববৃহৎ জুলুছের স্বীকৃতি আদায়ে আবেদন

 নিজস্ব প্রতিবেদক |  শনিবার, অক্টোবর ৮, ২০২২ |  ৬:৩৮ অপরাহ্ণ
       

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে ৫০তম বারের মত চট্টগ্রামে আয়োজিত ঐতিহাসিক জশনে জুলুছকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জুলুছের স্বীকৃতি দিতে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

জশনে জুলুছের আয়োজক সংস্থা আনজুমান এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে এই আবেদন করেছে। সর্ববৃহৎ এই ইসলামী শোভাযাত্রা পর্যবেক্ষণ করার জন্য শনিবার গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের একটি টিম চট্টগ্রাম এসেছে। আগামীকাল রবিবার দলটি জশনে জুলুছ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করবে বলে গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে।

গোয়েন্দার সংস্থা সূত্রে জানা যায় এবারের ৫০তম জুলুছে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তাদের ব্যপক প্রস্তুতি রয়েছে একই সাথে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণ টিম আসার কারণে তদারকি ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা বহুগুণ বাড়ানো হয়েছে।

আঞ্জুমানের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্লোগান নিউজকে বলেন,আমাদের সংস্থার আশেক ভাইয়েরা আবেদন করেছে বলে আমি জানতে পারি এবং আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল ৯ অক্টোবর জুলুছ পর্যবেক্ষণ করবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ম্যানেজমেন্ট টিম।

গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় পরিষদের সূত্র জানায়,আনজুমান ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় এই জুলুস ৯ অক্টোবর রবিবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হবে। জুলুসে নেতৃত্ব দেবেন পাকিস্তান থেকে আগত আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মা;জি;আ;) তিনি সিরিকোর্ট শরিফের দরবারে আলিয়া কাদেরীয়া শেতালুল এর সাজ্জাদানশীন। এতে আরও অংশগ্রহণ করবেন আল্লামা পরী সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ ও শাহজাদা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ।

জুলুছের রুট: ঈদে মিলাদুন্নবীর জুলুছ নগরীর বিবির হাট থেকে মুরাদপুর হয়ে মির্জারপুল,কাতালগঞ্জ হয়ে অলিখাঁ মসজিদ চকবাজার,কেয়ারি মোড়,প্যারেড ময়দানের পশ্চিম পাশ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজ,গণি বেকারী,খাস্তগীর স্কুল (ডানে মোড়),শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ রোড হয়ে আসকার দিঘী, কাজীর দেউরী (বামে মোড়),আলমাস (বামে মোড়),ওয়াসা (ডানে মোড়),জিইসি,দুই নম্বর গেট,পুনরায় মুরাদপুর (ডানে মোড়) বিবিরহাট হয়ে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুছ ময়দানে দুপুর ১২টায় সমাপনী মাহফিল,আবার একই ময়দানে যোহরের নামাজ এবং নামাজ শেষে দোয়া ও আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে (১৩৯৫ হিজরি) থেকে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (র.) নির্দেশনা ও রূপরেখা অনুসারে দেশে সর্বপ্রথম চট্টগ্রামে জশনে জুলুছ আয়োজিত হয়। সর্বপ্রথম জুলুছ চট্টগ্রামের কোরবানিগঞ্জ বলুয়ারদীঘি পাড়ের খানকাহ এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হয়। আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় দেশের প্রথম জশনে জুলুছের নেতৃত্ব দেন আনজুমান ট্রাস্টের তৎকালীন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নূর মোহাম্মদ আল কাদেরী। আর ১৯৭৬ সালে হুজুরকেবলা তৈয়্যব শাহ (র.) বাংলাদেশে সফরে আসেন। এরপর তিনি নিজেই জুলুছে নেতৃত্ব দেন, যা ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তিনি প্রতিবছর ৯ রবিউল আউয়াল ঢাকা এবং ১২ রবিউল আউয়াল চট্টগ্রামে আয়োজিত জশনে জুলুছের নেতৃত্ব দেন। তৈয়ব শাহ’র মৃত্যুর পর তার ছেলে হুজুর কেবলা তাহের শাহ ঈদে মিলাদুন্নবীর জুলুছের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। ইতিমধ্যে হুজুর কেবলা তাহের শাহ চট্টগ্রাম এসে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।