জানুয়ারিতে চাকরি হারাচ্ছে রেলের ৫ হাজার অস্থায়ী কর্মী

 উজ্জ্বল দত্ত |  বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৬, ২০২২ |  ৭:৪৪ অপরাহ্ণ
       

রেলওয়েতে ‘আউটসোর্সিং’-এর মাধ্যমে শূন্যপদে অস্থায়ী লোক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে সরকার। রেলওয়েতে গেটকিপার, পয়েন্টসম্যান, পোর্টার, ওয়েম্যান, টিএক্সআর খালাসি, ওয়ার্কশপ খালাসি, লোকো খালাসি,অফিস সহকারীসহ বিভিন্ন পদে টিআরএল (টেম্পোরারি লেবার রিক্রুট) ভিত্তিতে প্রায় ৫ হাজার কর্মী দায়িত্ব পালন করছেন। এমন অবস্থায় সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়িত হলে আগামী ডিসেম্বরের পর অর্থাৎ ২০২৩’র প্রথম দিন থেকে এসব অস্থায়ী কর্মীদের চলে যেতে পারে চাকরি। চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে রেলওয়ের অস্থায়ী কর্মচারীরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, রেলে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪ হাজার ৮৯৬ জন অস্থায়ী শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে ১০০ জনের চাকরি ইতোমধ্যে চলে গেছে। অবশিষ্ট লোক এখনও কাজ করছেন। এ খাতে রেলকে ৬০ কোটি টাকা খরচ করতে হয়। তবে রেলে আরো ১ হাজার শ্রমিকের চাহিদা চাহিদা রয়েছে।

অস্থায়ী শ্রমিকরা ক্যাটাগরি-ভেদে ১৫ হাজার টাকা, ১৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১৭ হাজার ২৫০ টাকা করে বেতন পান। এ হিসাবে দিন প্রতি তাঁরা ৫০০ টাকা, ৫৫০ টাকা এবং ৫৭৫ টাকা করে বেতন পান। তবে অস্থায়ী শ্রমিকদের জন্য গত জুলাই থেকে কোনো বাজেট বরাদ্দ কিংবা চাকরির মঞ্জুরি হয়নি। এ কারণে অস্থায়ীরা বেতন পাচ্ছেন না । তাঁরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা।

রেলওয়ে অস্থায়ী (টিএলআর) শ্রমিক পরিষদের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ১০-১৫ বছর ধরে কর্মরত দ¶ শ্রমিকদের ছাঁটাই করার অপচেষ্টা হচ্ছে। এটা হলে স্টেশন এবং বিভিন্ন লেভেল ক্রসিং লোকবল সংকটে বন্ধ হয়ে যাবে। পাশাপাশি ট্রেন অপারেশনাল কাজেও ব্যাঘাত ঘটবে। ট্রেন দুর্ঘটনাও বাড়বে। আমরা রাজপথে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলী বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে শূন্যপদে লোক নিয়োগের বিষয়টি রেলওয়ের নয়, সরকারের। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ নিয়ে পরিপত্রও জারি করা হয়েছে। রেলওয়ে কেবল সরকারের নির্দেশনা অনুসরণ করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালা-২০১৮ প্রণয়ন করে সরকার। এতে সেবা গ্রহণকারী ও সেবা ক্রয়কারীর বিষয়ে বিস্তারিত রূপরেখা দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ১০ জুন অর্থ মন্ত্রণালয় এক পরিপত্রে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সেবা আদান-প্রদানে অর্থমূল্য নির্ধারণ করে দেয়। এর পর থেকে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। রেলেও একই প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন শুরু হলে গত জুলাইয়ে ১০০ জন অস্থায়ী শ্রমিক চাকরি হারান।
তবে এর আগে গত ১৩ জুন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে একটি চিঠি দেয় রেল কর্তৃপ¶। এতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে লোক নিয়োগের বিষয়টি পুনর্বিচেনার দাবি করা হয়। বলা হয়, রেলওয়েতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ হলে সেবা বিঘিœত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু এই চিঠির কোন ইতিবাচক উত্তর আসে নি বলে জানা গেছে।