মহাষষ্ঠীর মাহেন্দ্র লগনে উলুধ্বনি, শঙ্খ-ঘণ্টা আর ঢাক-ঢোলের আরতির মাধ্যমে বোধন হল মাতৃরূপী দশভূজা দেবী দুর্গার।
শনিবার (১ অক্টোবর) সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে সকল মন্দিরে মন্দিরে দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মহাষষ্ঠীর আনুষ্ঠানিকতা। মহাষষ্ঠীর মহা লগনে শরতের শিউলির গন্ধ নিয়ে শুরু হয়েছে চারদিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব।
মহাষষ্ঠীর কল্পারম্ভে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মন্দিরে সকাল থেকেই মানুষের ঢল দেখা গেছে। নানা বয়সী সনাতনী সম্প্রদায়ের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মহাষষ্ঠীর সকাল হয়ে উঠেছে আনন্দময়। আনন্দলোকের এই আনন্দ সমীরণে নতুন জামাকাপড় পড়ে মেতে উঠতে দেখা গেছে শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী মানুষকে। সন্ধ্যায় হবে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী মর্ত্যে আসছেন গজে (হাতিতে) চেপে। গজ বা হাতিতে চড়ে দেবীর আগমনের অর্থ হল শুভ। মনে করা হয়ে থাকে দেবী যদি গজে চড়ে মর্ত্যে আসেন তাহলে তিনি সঙ্গে করে সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। হাতি হচ্ছে জ্ঞান এবং সমৃদ্ধির প্রতীক। আর ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবী মর্ত্য ছাড়বেন নৌকায় চড়ে। নৌকায় মনোকামনা পূর্ণ হওয়া বোঝানো হয়। ধরিত্রী হয়ে ওঠে শস্য শ্যামলা। কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা যায়।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, শনিবার মহাষষ্ঠীর সকাল, দুর্গা দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ এবং ষষ্ঠিবিহিত পূজা, সন্ধ্যায় হবে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। রোববার মহাসপ্তমী পূজা, সোমবার মহাষ্টমী, মঙ্গলবার মহানবমী এবং বুধবার দশমীবিহিত পূজার মধ্য দিয়ে সমাপন ও প্রতিমা বিসর্জন হবে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলায় এবার ২০৬২ পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব হচ্ছে। জেলার ১৪টি উপজেলার ১৫৫৭টিতে মন্দিরে এবার দুর্গোৎসব উদযাপিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মহানগরের ২৮২টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, করোনার কারণে বিগত সময়ে পূজা উদযাপিত হলেও নানামুখী সীমাবদ্ধতা ছিল। এবার সরকার ও সর্ব সম্প্রদায়ের সম্মিলিত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হচ্ছে। পূজার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদেরকে মন্ডপে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সরকারি সংস্থা প্রতিনিধি, আয়োজক পক্ষের সাথে সহায়ক শক্তি হিসেবে নেতাকর্মীরা দায়িত্ব পালন করবে।
স্লোগান